শুধু নেতিবাচক কথা বললে কুকুর নিধন বাড়বে : ইমিল
তাসকিনা ইয়াসমিন : নগরীতে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এই নিয়ে কথার অন্ত নেই। অনেকেই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। কুকুর নিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়ছে। এই অবস্থার পরিবর্তনে করণীয় নিয়ে কথা বলেছেন পিপল ফর এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার (ডাব্লিউপিএডাব্লিউ)-এর ফাউন্ডার ও চেয়ারপারসন রাকিবুল হক ইমিল। তিনি বলেন, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, কুকুর বেড়েছে এই কথাটা সবাই বলছেন বড় কুকুরকে ছুটোছুটি করতে দেখে। প্রশ্ন হলো, গত দুমাস আগেও কেউ কুকুর বেড়ে যাওয়া নিয়ে খুব বেশি মাথায় ঘামায়নি। কারণ এই কুকুর এতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গিয়ে হুড়োহুড়ি করছে তা নয়- এই মাসটাই কুকুরের প্রজনন সময় এবং এসময় কুকুরের চঞ্চলতা বেড়ে যায়। কাজেই এতোদিন শান্ত হয়ে শুয়ে থাকা কুকুরগুলো যখন প্রজননের জন্য বহুল জনসংখ্যার একটি শহরে ছুটোছুটি করে, তখন সবার চোখে পড়ে এবং সবাই ভাবেন কুকুর বেড়ে গিয়েছে। শহরে কুকুর বাচ্চা দেয় ৬-৭টি বা তারও বেশি। কিন্তু এর মাঝে প্রায় ৭০/৮০ ভাগই নানাভাবে মারা যায়। এটা আমার গত ৫ বছরের উদ্ধারের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। যতটুকু জানি, প্রকাশিত পরিসংখ্যানগুলোও আরও বেশি ধারণাগত। কাজেই বন্ধ্যাকরণ হল একমাত্র উপায় কুকুরকে শান্ত রাখবার এবং ভারসাম্য বজায় রেখে কুকুরের সংখ্যা বাড়তে দেওয়া বা কমতে দেওয়া। অপরদিকে পরিবেশে সহাবস্থানকারী প্রাণী এই কুকুরের সঙ্গে মানুষের আচরণ বিশেষ করে শিশুদেরকে সচেতন করতে হবে। কারণ উত্ত্যক্ত করতে গিয়ে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি কুকুরের কামড়ের স্বীকার হয় এবং একবার কামড় দিলে সেই কুকুরকে মারতে আরও অনেকে উদ্যত হয়ে কুকুরটিকে আক্রমণ করেন। ফলে সেই কুকুর নিজে বাঁচতে আরও কয়েকজনকে কামড় দেয়। এভাবে একজন সুস্থ কুকুর নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে ‘পাগলা কুকুরের’ নাম পেয়ে যায়। বাড়ে হাসপাতালে রোগীর ভিড়। কাজেই মানবিক পদ্ধতিতে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এলাকাভিত্তিতে যেমন জরুরি, তেমনি কুকুরের কামড় নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা এবং কুকুরকে জলাতঙ্করোধী টিকা দেওয়া বেশি জরুরি। সর্বোপরি যে প্রাণীটি মানুষের এতটা কাছাকাছি বাস করে, তার স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যের ইতিহাস এবং ৫০ বছরের নিধনচর্চার ফলে মানুষের প্রতি তার সাইকোলজিক্যাল পরিবর্তন নিয়ে প্রাণীবিদদের কাছ থেকে গবেষণালব্ধ মতামত নিয়ে কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করা জরুরি। গবেষণা ছাড়া ঢালাওভাবে শুধু সমস্যার কথা বলে গেলে, সাধারণ মানুষ হতাশ, ভীত এবং কা-জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়বেন। বাড়বে নিজ উদ্যোগে কুকুরের মতো বন্ধু প্রাণী হত্যা করবার মতো নিষ্ঠুরতা। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ