আজ পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’
আনিসুর রহমান তপন : আজ সরকারিভাবে প্রথমবার পালিত হচ্ছে ‘ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। ‘সাবধানে চালাবো গাড়ি, নিরাপদে ফিরবো বাড়ি’ শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ও সড়ক পথে দূর্ঘটনা হ্রাসে জনসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে সরকারি-বেসরকারিভাবে সারাদেশে পালন করা হচ্ছে এই দিনটি। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)সহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে টক-শো’র পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। তাছাড়া ঢাকার গুরুত্বপূর্ন টার্মিনালসমূহ এবং জেলা পর্যায়ের প্রধান প্রধান টার্মিনালে সন্ধ্যার পর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের কর্মসূচি রয়েছে। সড়ক ও জনপথ অদিদপ্তর (সওজ), ডিটিসিএ, বিআরটিসিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলো কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিজস্ব সহায়ক কর্মসূচি পালন করবে। পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই এবং বিভিন্ন সংগঠন স্ব-স্ব কর্মসূচি পালন করবে। জাতীয়ভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস সুষ্ঠুভাবে পালন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ স্কাউটস এর সহায়তায় কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সফল করতে এর সদস্যদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাস ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত পেশাজীবি গাড়িচালকদের দক্ষতা এবং মানবিক গুনাবলী বিকাশে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য যানবাহন, মালিক-শ্রমিক-চালক ও পথচারীসহ যাত্রী সাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে নিয়মিত সভা-সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও জনসচেতনতা কর্মসূচি অব্যাহত আছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, হাইওয়ে রেঞ্জ পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আধুনিক সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনার অন্যতম বিষয় সড়ক দূর্ঘটনা কমিয়ে আনা। টহরঃবফ ঘধঃরড়হং উবপধফব ড়ভ অপঃরড়হ ভড়ৎ জড়ধফ ঝধভঃু ২০১১-২০২০ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ২০৩০ এর অনুসমর্থনকারি হিসেবে বাংলাদেশ ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যা অর্ধেক নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার অঙ্গিকারাবদ্ধ।
২০০৮ সালে চার হাজার ৪২৭টি দূর্ঘটনায় তিন হাজার ৭৬৫ জন নিহত হয়েছে। এরপর সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাসে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে মালিক-শ্রমিক-চালক, পথচরী, যাত্রী ও জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য নিয়মিত সভা, ওয়ার্কশপসহ জনসচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ২০১৬ সালে দূর্ঘটনার হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায় বলে দাবি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এ সময় দুই হাজার ৫৬৬টি সড়ক দূর্ঘটনায় দুই হাজার ৪৬৩ জন নিহত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর আগষ্ট পর্যন্ত এক হাজার ৮৩৭টি সড়ক দূর্ঘটনায় এক হাজার ৭৯৪ জন নিহত হয়েছেন।
দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান মহাসড়ক ও যানবাহন চাহিদার প্রেক্ষিতে গুনগত পরিবর্তন হয়েছে দাবি করে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি বর্তমানে দেশের প্রায় শতকরা ৭০ভাগ যাত্রী এবং ৮০ভাগ পন্য মহাসড়ক পথে পরিবহন করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২২ অক্টোবরকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সম্পর্কিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেনীর মর্যাদা দিয়েছে সরকার। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি