বাজারে চালের দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি
তরিকুল ইসলাম সুমন : দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভিযান পরিচালনার চাপেও চালের দামে খুব একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। পাইকারি বাজারে কিছুটা দাম কমানো হলেও খুচরা পর্যায়ে মোটাচালের দাম কেজিকে ১ টাকা কমেছে। বাকি চালের বাজারে প্রভাব নেই বললেই চলে।
বাসাবো, খিলগাঁও, কাওরান বাজারের বিক্রেতারা জানান, ২০ সেপ্টেম্বরের দিকে মিল মালিকেরা প্রথম ধাপে চালের দাম বস্তায় দেড়শ টাকার মতো কমিয়েছিলেন। পরের সপ্তাহে কমেছে আরো ২৫ টাকা। এরপর চালের দাম আর কমেনি। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামের লোভে অনেক চাল মজুদ রেখেছেন। এসব মজুদদার ব্যবসায়ী নতুন চাল না কিনে তুলনামূলক বেশি দামে আগের চাল বিক্রি করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি পর্যায়ে চালের শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে দাম কমেছে সামাণ্য। সরকারের পক্ষ থেকে খোলাবাজারে চাল বিক্রি হলেও দাম তুলনামূলক বেশি। এছাড়া খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া চালের মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এতে সরকারের ওএমএস কার্যক্রম চালের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। বাজার ঘুরে দেখা যায়, এলাকা ভেদে খুচরা বাজারে এখনো মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়। আর পাইকারিতে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকায়। ফলে মিনিকেটের খুচরা মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৬০ থেকে ৬৮ টাকা, আর পাইকারি মূল্য ৫৮ টাকা। কোরবানির ঈদের পর ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যায়। আগে এই মিনিকেট বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। মিনিকেটর মতোই বিআর আটাশ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরায় বিআর আটাশ ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৬০০ টাকা, আর পাইজাম ২ হাজার ৫০০ টাকা করে। তবে বাজারে ভারতীয় চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় মানুষ কিছুটা কম দামে মোটা চাল পাচ্ছে। ভারতীয় মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তা এখন ২ হাজার ২৫০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। ভারতীয় আটাশ চালও ২ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন জানান, খুচরায় মিনিকেট কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা, ভারতীয় আটাশ চাল ৪৭ টাকা, দেশি আটাশ চাল ৫৪ টাকা এবং ভারতীয় মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাসাবো চালের আড়তে হাওলাদার ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী ইকবাল বলেন, আমদানি পর্যায় ও মিলগেট কিংবা পাইকারি পর্যায়ে দাম কমলেও এর প্রভাব খুচরা বাজারে সেভাবে পড়বে না এবং পড়ার তেমন সম্ভাবনাও নেই। কারণ বড় কয়েকটি ছাড়া রাজধানীর বেশিরভাগ কাঁচাবাজার বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে উঠেছে। আর বাজারের চেয়ে অলিগলিতে দোকানের সংখ্যা আরো বেশি। যা মনিটরিং করার লোক নেই। মনিটরিং না থাকলে দাম কমানো সম্ভব নয়। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ