টিএসসিতে সব কার্যক্রম রাত ৮টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ নিরাপত্তার কথা বলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হচ্ছে
রিকু আমির : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সব কার্যক্রম রাত ৮টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টিএসসির পরিচালক মহিউজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিএসসিতে অবস্থিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে বিবিধ বিবেচনায় নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ নিজ কার্যক্রম রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। তবে কাজের স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত করা যাবে।
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে চিত্রশিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী শনিবার বিকালে এ প্রতিবেদকের প্রশ্নে বলেন, নিরাপত্তার কথা বলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হচ্ছে। এটা আরও আগ থেকেই শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত মানে তো সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সংকুচিত করা নয়। আরেকটি প্রশ্নে তিনি বলেন, টিএসসি মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চার জায়গা। এটা অতি পুরাতন বিষয় এখানের জন্য। এখানে যারা সংস্কৃতি চর্চার জন্য যান, বেশিরভাগই ছাত্র। সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস সেরে রাতেই যাওয়ার সুযোগ পান ছাত্ররা। রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করলে কখন সেই ছাত্ররা সংস্কৃতি চর্চা করবে। আসলে প্রশাসনে একটি চক্র আছে, তারা বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তার কথা বলে সংস্কৃতি চর্চার পথ রুদ্ধ করে যাচ্ছে।
টিএসসিতে ৩০টিরও বেশি সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই অননুমোদিত। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, প্রগতিশীলতা ও রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে অনুমতি ছাড়া কার্যক্রম চালানো সংগঠনগুলো অনুমতি পাওয়া সংগঠনগুলোর কক্ষ বা স্থান দখল করে মাদক সেবনসহ দেশের প্রচলিত আইনবিরোধী কাজ করে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে দেশের প্রচলিত আইনবিরোধী কাজে লিপ্ত হন প্রতিনিয়ত এবং পুলিশকে তোয়াক্কা করে না; পুলিশও তাদের কিছু বলতে বা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে বলে শাহবাগ থানা পুলিশ সূত্র বলছে। একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাঠিয়ে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে রমনা জোনের একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য।
পুলিশি প্রতিবেদনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউ আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে ইচ্ছুক নন। নাম না প্রকাশের শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র অবশ্য স্বীকার করেছে- আইনপরিপন্থী বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবগত করেছে পুলিশ এবং কীভাবে এসব প্রতিরোধ করা যায়, সে বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠকও হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার এ প্রতিবেদকের প্রশ্নে শনিবার বিকালে বলেন, পুলিশ এ বিষয়ে কিছু জানে না। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ