শিল্পীর রাজনৈতিক ভ্রান্তির উদাহরণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফ্যাসিবাদ সমর্থন
শিল্পীরা রাজনীতিক নন। তাই, তাদের পক্ষে রাজনৈতিক ভুল করা অস্বাভাবিক নয়। ইতিহাসে অনেক বড়ো শিল্পীও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ভুল করেছেন এই বিদ্যাটিতে তারা চৌকস নন বলে।
শিল্পীরা রাজনীতিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে জাতি ভোগে না, কিন্তু তারা শিল্পে ভুল করলে জাতি শিল্পবোধের দারিদ্রে ভোগে। কিন্তু রাজনীতিকেরা যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ভুল করেন, তা সমগ্র জাতির ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খান আতাউর রহমান পাকিস্তান-আমলে শিল্পের মাধ্যেমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সবচেয়ে চৌকশ সেবক ও বিকাশক ছিলেন। তিনি শিল্পে ভুল করেননি।
সুতরাং নায়ক ফারুক কিংবা সোহেল রানার মতো মুক্তিযোদ্ধাদের মতে খান আতাউর রহমান যদি ‘পরিস্থিতির শিকার’ হয়ে পাকিস্তানের পক্ষে রাজনৈতিক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে থাকেন, সেটি হবে একজন শিল্পীর পক্ষে রাজনৈতিক ভুল। একজন শিল্পীর নিরুপায় রাজনৈতিক ভুলের জন্যে তার সঠিক শৈল্পিক অবদানকে খাটো করা যায় না। তারপরও যদি কোনো শিল্পী অন্য শিল্পীকে তার নিরুপায় রাজনৈতিক ভুলের জন্যে ক্রিমিনালাইজ করে, বুঝতে হবে সেই অভিযোগকারী ‘শিল্পী’ মূলতঃ একজন রাজনীতিক, শিল্পী নন।
আমাদের মনে রাখা উচিত যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম দিকে ফ্যাসিবাদের পিতা বেনিতো মুসোলিনির সমর্থক ও প্রশংসাকারী ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার নয়, দুবার সাক্ষাৎ করেছিলেন মুসোলিনির সঙ্গে, বিশ্বভারতীর জন্যে আর্থিক অনুদান পেয়ে কৃতজ্ঞতা বশে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ফ্যাসিবাদ-প্রীতি, তা ছিল তার রাজনৈতিক ভ্রান্তি, যা তিনি পরে বুঝতে পেরে লজ্জিত হয়েছিলেন। যাহোক, রবীন্দ্রনাথের এই রাজনৈতিক ভুলের কারণে তার শিল্পীসত্তাকে কেউ কালিমালিপ্ত করেনি।
-লন্ডন, ইংল্যান্ড/ ফেসবুক থেকে