নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে জমি অধিগ্রহণ করে খাল সৃষ্টি করতে হবে
অল্প বর্ষণে আমরা কাবু হয়ে চাচ্ছি, এর জন্য প্রয়োজন কঠিন সিদ্ধান্ত। ২৭ নম্বর সড়কের মোড়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ধানমন্ডি লেকের সাথে একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশন নতুন করে সে জায়গা ডেনেজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে; এতে ধানমন্ডি লেকের সঙ্গে যুক্ত করার যে কাজটি ওয়াসার সাথে সংযুক্ত করা, সে কাজটি তারা পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাবের কারণে সেটা করেনি। একইভাবে শান্তিনগরের পানি চলে যাওয়ার জন্য মান্ডা খাল এবং ত্রিমহনী পর্যন্ত অন্য যে খালগুলো রয়েছে, সে খালগুলোতে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অব্যবস্থার কারণে আবর্জনা জমাট বেঁধে আছে; যার দ্বায়িত্ব অনেকটাই সিটি করপোরেশনের। এ দায়িত্ব কিছুটা ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের এবং অবশ্যই ওয়াসারও। ওই জায়গাকে পরিষ্কার না করে শান্তিনগরের জন্য বারবার প্রকল্প গ্রহণ করা একধরনের ভ্রান্তনীতি। এসব কারণে আমরা সমাধানে চারটি শব্দযুক্ত করে একটি প্রকল্পের কথা বলেছি; যেটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী এবং পানিসম্পদ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তারা মেয়রদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন। সে চার কথা হচ্ছেÑ সার্বিকভাবে সময় নির্ভর, সমন্বিত এবং জনসম্পৃক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। সে উদ্যোগ অবশ্যই জনপ্রতিনিধিত্বশীল কোনো একটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে কার্যকর করা দরকার। যাতে এ জনসম্পৃক্ততা রাজনৈতিক অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয় এবং সে কারণেই আমরা মনে করেছিলাম সিটি করপোরেশনের পক্ষেই এটা করা সম্ভব। কারণ মেয়র এবং কাউন্সিলররা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। আমরা এটাও বলেছি, এ কার্যক্রমে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভূমি উন্নয়ন ও ভূমি ব্যবহার আইন প্রণয়ন অনুশাসন কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। এ-ও বলেছি, যেহেতু আমরা কর্ডন পদ্ধতিতে ঢাকা শহরকে বাঁধ দিয়ে বেষ্টিত করে ফেলেছি, সেহেতু ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড পাম্প দিয়ে পানি বের করার যে চেষ্টা করছে তার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এসব কাজ কারার ক্ষেত্রে খাল ও জলাধারগুলো উদ্ধারের ক্ষেত্রে কঠোর আইনি কার্যক্রম, রাজনৈতিকভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে পতিপালন করতে হবে। মনে রাখা দরকার, আমরা যদি সড়কের জন্য, প্লট বানানো, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ, ফ্লাইওভারের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে পারি, তাহলে রাজনাধী ঢাকার দুই কোটির অধিক মানুষ বাঁচানোর জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে দ্বিধান্বিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এবং ধোলাইখাল বক্স কালবার্ডকে খাল বানানোর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বা আকাক্সক্ষা প্রকাশ করা সত্ত্বেও যে তালবাহানা চলছে সেটি থেকে মুক্ত হয়ে, প্রয়োজনে নতুন খাল তৈরি করে হলেও ঢাকাবাসীকে বাঁচাতে হবে।
পরিচিতি : নগরবিদ
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: খন্দকার আলমগীর হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান