রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের সমর্থন আদায় সরকারের কূটনৈতিক সফলতা
ড. অনুপম সেন
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা এদেশে আশ্রয়ের খোঁজে এসেছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। প্রয়োজনীয় সবকিছুই করছে তাদের জন্য। কিন্তু কেন রোহিঙ্গারা এখানে আসতে বাধ্য হচ্ছে, মিয়ানমার যাতে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয় সে জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও চেয়েছে বাংলাদেশ। সহযোগিতা চেয়েই বসে থাকেনি, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। তার ফল আমরা পেতে শুরু করেছি। বলা হচ্ছিল রাশিয়া, চীন এবং ভারত মিয়ানমারকে সমর্থন করছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বক্তব্য পরিষ্কার, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। এটা তিনি জোর দিয়েই বলেছেন। এবং মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত যাতে তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়। যদিও মিয়ানমারে ভারতের অনেক স্বার্থ রয়েছে। তাদের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ভারতের এবং প্রায় সব খনিজ সম্পদ রয়েছে মিয়ানমারে। তারপরও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে। একটা জিনিস খেয়াল করবেন, যখন সামরিক শাসক ছিলÑ আমেরিকা, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের সব দেশ যখন একঘরে করে রেখেছিল মিয়ানমারকে তখনও কিন্তু চীন-ভারত তাদের সঙ্গে ছিল। যদিও ভারত প্রায়ই গণতন্ত্রের কথা বলে থাকে, কিন্তু মিয়ানমারের ব্যাপারে চুপ ছিল। চীনের কমিউনিস্ট শাসকরা মনে করেন, উন্নয়ন হলেই হলো। ভারত ও চীনের স্বার্থ জড়িত রয়েছে বলে তারা তাদের সমর্থন করেছে। তবে মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এটা মানবিক বিষয়, এ বিষয়ে একমত হওয়া উচিত সবারই। চীন শ্রীলঙ্কায় একটি বন্দর স্থাপন করেছে, মিয়ানমারেও একটা বন্দর স্থাপন করতে চায়। তাদের একটা সেফ জোন স্থাপন করতে চায়, এটাই চীনের স্বার্থ।
যদিও জাতিসংঘে তারা মিয়ানমারকে সেভাবে সমর্থন করেনি। যেভাবে সমর্থন দেবে বলে ভেবেছিলাম। তারপরও গণমাধ্যমে দেখলাম তারা মিয়ানমারকে যে সমর্থন দিয়েেছ, তা প্রত্যাহার করেনি। চীন তো এতটা অমানবিক হতে পারে না। তাদের কিছুটা মানবিক হতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের সমর্থন আদায় সরকারের কূটনৈতিক সফলতা বলে মনে করি।
পরিচিতি : উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ : খন্দকার আলমগীর হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান