ইসির সংলাপে প্রস্তাব বেশি সেনা মোতায়েন ও সংসদ ভেঙে ভোটগ্রহণ
সাইদ রিপন : আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা সংলাপে সেনা মোতায়েন ও সংসদ ভেঙে ভোটগ্রহণের পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৪০টি দল থেকে মোট ৫৯৫টি সুপারিশ এসেছে। সুপারিশমালায় কালো টাকা-পেশিশক্তি বন্ধ ও নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগসহ কিছু প্রস্তাবনা সবগুলো দল থেকেই এসেছে। এভাবে ঘুরেফিরে সব দলের প্রস্তাবেই মোটামুটি ৫০টি মৌলিক পরামর্শের মধ্যে সীমাবব্ধ রয়েছে।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় শেষ হওয়া প্রসঙ্গে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, ২৪ আগস্ট থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৪০টি দলের সঙ্গে ইসির সফলভাবে সংলাপ শেষ হয়েছে। সবাই খুব আন্তরিক ছিলেন, আমরাও সহায়তা পেয়েছি। অবশ্য ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছেন, সংলাপ শেষে সবার প্রস্তাব একীভূত করে আমরা বই আকারে প্রকাশ করব। রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলে এগুলো পাঠাব। তাছাড়া আমাদের করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বসব। যেসব বিষয় আমাদের এখতিয়ারে নেই সেগুলোর বিষয়ে সরকারের কাছে প্রয়োজনে পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা করা হবে।
ইসিতে উপস্থাপিত শীর্ষ ১০টি সুপারিশ তুলে ধরা হলো- ১. সংলাপে অংশ নেয়া ৪০টি দলের মধ্যে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে সেনা নামানোর প্রস্তাব করেছে। ২. নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির স্বার্থে সংসদ ভেঙে ভোট গ্রহণের দাবি করেছে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ১৮টি দল। ৩. সংলাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বা ডিজিটাল ভোটিং মেশিনের (ডিভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে আওয়ামী লীগসহ ১২টি রাজনৈতিক দল। ৪. সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার থাকার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পার্টিসহ ১২টি রাজনৈতিক দল। ৫. অপরদিকে বিএনপিসহ ১১টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে। ৬. ইভিএম ভোটগ্রহণের বিপক্ষে প্রস্তাব করেছে বিএনপিসহ ১০টি দল। ৭. অপরদিকে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে ৯টি দল। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শুরু থেকে বলে আসছে সবই হবে সংবিধান অনুযায়ী। তারা এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দেয়নি। ৮. ৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার বিপক্ষে মত দিয়েছে। ৯. ৬টি দল না ভোটের বিধান চালু করার পক্ষে মত দিয়েছে। ১০. নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি ইসির ওপর ছেড়ে দিয়েছে ৫টি দল।
এছাড়া নির্বাচনে সহিংসতা না করতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে শপথ করানোর জন্য ইসিকে পরামর্শ দিয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ। এ প্রস্তাবটি অন্য কোনো দল দেয়নি। তাছাড়া আরো একটি প্রস্তাব শুধুমাত্র একটি দলই দিয়েছে। হলফনামার বিধান বাতিল করতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রস্তাব দিয়েছে। জাসদের এ প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ