বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি বন্ধ করতে হবে
মোহাম্মদ আবদুল অদুদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ মূলত দুটিÑ জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান বিতরণ করা। তিনি বলেন, জ্ঞান সৃষ্টির জায়গায় যদি চৌর্যবৃত্তি হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানের বিস্ফোরণ ঘটাবে কিভাবে? সমাজকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে? অর্থনীতিকে কি করে সমৃদ্ধ করবে? বিশ্ব জ্ঞানভা-ারে কিভাবে অবদান রাখবে? সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে চৌর্যবৃত্তিকে বন্ধ করা।
আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এই শিক্ষাবিদ বলেন, চৌর্যবৃত্তির অনেক ফর্ম আছে। যেমন : হুবহু কোট করে রেফারেন্স না দেওয়া, আইডিয়া ধার করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া, একজনের কাজ দশজনের নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়া প্রভৃতি। এ সবই চৌর্যবৃত্তি। এসব বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের খুব সিরিয়াসলি দেখা উচিত। সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং আইনের কোনো লঙ্ঘন হলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থী ও অন্যদের সামনে নৈতিক আদর্শ হিসেবে থাকার ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে করে দিতে হবে। কেননা, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সেজন্য অভিযোগ আসার পর প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারা ফেল করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে মঞ্জুরি কমিশন।
তিনি উল্লেখ করেন, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পারিপার্শি¦কতার কারণে, বন্ধু-বান্ধবের কারণে, সম্পৃক্ততার কারণে, রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। মঞ্জুরি কমিশন সে ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। কারণ, অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে সরাসরি ইউজিসির সম্পৃক্ততা থাকে না। যে সব বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট দ্বারা পরিচালিত, সেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত আছে। যে ক্ষমতা ইউজিসিরও নেই। তিনি বলেন, বড় বড় যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের এ্যাক্ট দ্বারা পরিচালিত, সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে, সিন্ডিকেটে এবং একাডেমিক কাউন্সিলে এসব বিষয় সিরিয়াসলি ডিসকাস করা উচিত। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সত্য প্রমাণিত হলে অ্যাকশনও নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।