কম্বল না ধুয়ে ব্যবহার হয় বারবার এজমায় আক্রান্ত হচ্ছে কারাবন্দিরা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও সুজন কৈরী : দেশের বিভিন্ন কারাগারে থাকা বন্দিদের মধ্যে শতকরা ৩২ ভাগ এজমা ও ডায়াবেটিকে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা বলছেন অপরিচ্ছন্ন জীবন-যাপন ও খাদ্যাভাসের কারণে বন্দি এ রোগে আক্রান্তÍ হচ্ছে। কারা অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৭৩ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন। এসব কারাবন্দিদের মধ্যে ৭ হাজার ১৩৮ জন বা ৯ দশমিক ৭ শতাংশই নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ২ জন পুরুষ কারাবন্দি এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত। ১১৫ জন টিবি যোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে ১০৭ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী। এজমা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৭৫। এর মধ্যে ১ হাজার ১৭৯ জন পুরুষ এবং ৯৬ জন নারী। ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত ১ হাজার ১৫০ জন কারাবন্দি। এরমধ্যে এক হাজার ৫৪ জন পুরুষ এবং ৯৬ জন নারী। এছাড়া মাদক সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত ৪ হাজার ৫৯৬ জন। এরমধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ জন পুরুষ এবং ৯১ জন নারী কারাবন্দি।
কারা অধিদপ্তরের চিকিৎসক ডা. বিপ্লব বলেন, কিছু কারাবন্দি আছেন, যারা কারাগারে আসার আগেই এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আবার কারাগারে আসার পরেও এজমা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন অনেকে। তবে ডায়াবেটিক আক্রান্তদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। দেখা যায়, কারাগারে আসার আগেই তাদের ডায়াবেটিক ছিলো। কিন্তু সেটি কারাগারে আসার পরে ধরা পড়ে। কোনো কারাবন্দির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বাইরের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করিয়ে আনা হয়। এছাড়া ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পৃথক ফুড মেনু ও সকাল-বিকাল এক ঘন্টা করে হাঁটার অনুমতি রয়েছে। এছাড়া এইচআইভি এইডস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বাড়তি কেয়ার নেয়া হয় বলে জানান এই কারা চিকিৎসক।
অভিযোগ রয়েছে, কারাগারে প্রবেশের সময়ই বন্দিদের শোবার জন্য ৩টি কম্বল দেয়া হয়। ওই কম্বলগুলো দীর্ঘদিন না ধোয়ার কারণে নানা ধরণের জীবানুর সংক্রামণ হয়ে থাকে। বন্দিরা ৩টি কম্বলের মধ্যে একটি কম্বল বিছিয়ে ঘুমান, একটি মাথার নিচে বালিস হিসেবে ব্যবহার করেন। আর একটি কম্বল শরীরে নেন। কারা ভোগ শেষে বের হয়ে যাওয়ার সময় ওই কম্বলগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে যান। পরে আবার যখন নতুন বন্দি আসেন, তখন তাদেরকেও একই পদ্ধতিতে ওই কম্বল দেয়া হয়। ফলে একই কম্বল অনেককেই ব্যবহার করতে হয়। আর এ কারণেই কারাবন্দিদের মধ্যে এজমা রোগের প্রদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ