‘এ ভাষণ একটি অনবদ্য ঐতিহাসিক দলিল’
আনিসুর রহমান তপন : বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য (ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টরি হেরিটেজ) হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। সোমবার প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দফতরে এ ঘোষণা দেন সংস্থাটির মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এব বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক তাৎপর্য রয়েছে এমন বিষয়গুলোকে বিশ্ব আন্তর্জাতিক রেজিস্টারের মেমোরিতে তালিকাভুক্ত করা হয় জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, এর অংশ হিসেবেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব আন্তর্জাতিক রেজিস্টারের মেমোরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংক্রান্ত তালিকাভুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি (আইএসি)। আইএসি কমিটি গত ২৪-২৭ অক্টোবর পর্যন্ত বৈঠক করে ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এই প্রতিবেদককে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ একটি অনবদ্য ঐতিহাসিক দলিল। একজন মানুষ মঞ্চে উঠে কোথাও কোনো রকম না থেমে, না হোঁচট খেয়ে যে ভাষণটি তিনি দিলেন, সেটি ছিল আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের দিক নির্দেশনা। শব্দ চয়ন, ভাষার ব্যবহার, আবেগ সবকিছু মিলিয়ে ঐ সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা ছাড়া আসলে অন্য কারো পক্ষ্যে বা ওই সময়ে ঐ পরিস্থিতিতে যারা ভাষণটি শুনেছেন তারা ছাড়া অন্য কারো পক্ষে ভাষণটির মর্ম উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। আমরা সে সময় যে কিভাবে আবেগতাড়িত হয়েছিলাম, মুগ্ধ হয়েছিলাম তা এখন ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেই সভায় উপস্থিত থেকে সরাসরি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনা আমার জীবনের একটি অসাধারণ শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা। নূর বলেন, আজ আমরা খুবই গর্বিত যে ইউনেস্কো এই ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির মধ্যে দিয়ে একটি জিনিস পরিষ্কার যে, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে একজন যুগশ্রেষ্ঠা নেতা ছিলেন, তিনি যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে একটি দেশ উপহার দিয়ে গেলেন, এই সমস্ত কিছুর আন্তর্জাতিক গ্রহণ যোগ্যতা তৈরি হলো। এক সময়ে যারা চেষ্টা করেছে স্বাধীনতা সংগ্রামকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করতে এবং পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আজ পর্যন্ত যারা চেষ্টা করছে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ছোট করতে, এমনকি তাকে অস্বীকার করারও অপচেষ্টা হচ্ছে এটা তাদের প্রতিও একটি জবাব। এ থেকে এসব বিরোধিতাকারীদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত যে ইতিহাস সব সময় সত্যি কথাটাই বলে শেষ পর্যন্ত। ইউনেস্কো এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে সেটি আবারো প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমি মনে করি এটি আমাদের একটি গর্বের অর্জন। ভাষণটি পুরো মানব জাতির জন্য একটি অসাধারণ রাজনৈতিক নির্দেশনা ও দর্শন হিসেবে পরিগণিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সম্পাদনা : তরিকুল ইসলাম সুমন