কৃষকের অধিকার, ব্যবসায়িক নৈতিকতা ও দেশপ্রেম
বন্যা হয়ে গেল। প্রচুর হাওর-বাঁওড়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মানুষ খেতে পাচ্ছে না। তারা ফসল ফলানোর জন্য সুযোগ পাচ্ছে না। এনজিওর মাধ্যমে বিভিন্ন যে লোন নিয়েছে শোধ করতে পারছে না। তারা যদি টাকাটা শোধ দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের ফসল ফলানোর জন্য বীজ, সার, ঔষধ এটা কিভাবে তারা কিনবে? শীত আসছে সবজির বাজারে দাম কম হবে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। ঢাকাতে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। যে কৃষক ফলিয়েছে সে ১৫ টাকার বেশি পায় নি। মাঝখানের যে গ্যাপটা মধ্যস্বত্বভোগীরা এটি করছে। শহরের চর্তুদিকে আমাদের যে বড় বড় পতিত জায়গা আছে, সেখানে বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর করা যায়। কৃষকরা এখানে দিয়ে যাবে। নির্ধারিত রেটটা কৃষককে দিয়ে দেবে, সে খুশি মনে চলে যাবে। নতুন ফসল ফলানোর জন্য উদ্যোগী হবে। তার দায়িত্ব হবে এই ফ্রেস পণ্যগুলো এখানে এসে কিনে নিয়ে যাবে। মধ্যসত্বভোগীর প্রয়োজন থাকবে না। বেড়িবাঁধের পাশে যদি দশ একর জমি নিয়ে ওয়্যার হাউজ ডিপার্টমেন্টাল স্টোর করে কৃষকরা এসে তাদের মাল এখানে দেবে, দেওয়ার সাথে সাথে তাদের পেমেন্ট করা হবে। শ্যাম বাজার, কারওয়ান বাজারের পাইকাররাও ওই জায়গা থেকে নিয়ে আসবে। তাদের বলতে হবে কৃষকরা এত টাকায় দিয়েছে, এটা এত টাকায় বিক্রি হবে। মনিটরিং যদি না করে সরকার, এটার কিছুই হবে না। এটার মনিটরিং অবশ্যই করতে হবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা দেখি ঈদ, শবেবরাত কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে সরকার সোচ্চার হয়, পরবর্তীতে খেয়াল করাটা হয় না, ফলে সে সুযোগটা সবাই নেয়। চাউল আমদানি করবে, যখন আমদানি করার কথা ঠিক সেই সময় করে নাই। পঁচিশ দিন পরে করছে। যেখানে ২০০ ডলার হওয়ার কথা সেখানে হয়েছে ৫০০ ডলার। সরকার টিসিবিকে সচল করছে না। সরকার চ্যালেঞ্জ করে টিসিবিকে সচল করুক। এখানে অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত রাখতে হবে। এতে মান ও মূল্য ঠিক থাকবে। পৃথিবীর সব দেশেই টিসিবি থাকে ব্যবসায়ীদের কন্ট্রোলে। কখনো সরকার ব্যবসা করবে না। সরকার করবে প্রশাসনিক কর্মকর্তার মাধ্যমে। সরকারের কাজ হবে তাদের কন্ট্রোল করা। এইভাবে আমরা যদি ওভারকাম করতে পারি, তাহলে ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত করা বেশি কষ্টদায়ক হবে না। আমাদের শুধু একটু লিডারশিপ দরকার। আমাদের সঠিক নেতৃত্ব দরকার। আমাদের সুন্দর চিন্তা করে যদি আমরা এগোতে পারি, এই যে ৬৫ শতাংশ কর্মক্ষম লোক আছে আমাদের তাদের কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। তাদের আমরা বিদেশে পাঠাব। ফ্যামিলি থেকে এক পয়সা দিতে হবে না বৈদেশিক ব্যাংক তাদের প্রোভাইড করবে। বেতনটা অটোমেটিকভাবে ব্যাংকে চলে আসবে। এভাবে তার ফ্যামিলিকে সে টাকা দেবে। দেখা যাবে কিভাবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়ে যায়। বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডির মাধ্যমে এ দেশে আসছে তাতে সরকারের লস হচ্ছে অনেক। ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশি টাকা বাংলাদেশে প্রেরণ করা যায়। সুতরাং এজন্য সরকার ও জনগণের মধ্যে প্রচ- দেশপ্রেম দরকার।
লেখক : পরিচালক, এফবিসিসিআই
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন