আল-হেরা পর্বতের সাধনা
সৈয়দ রশিদ আলম
সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে হেরা পর্বতের উপর একটি প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে। যারা হজ ও ওমরা করতে পবিত্র মক্কায় যান, তারা চেষ্টা করেন হেরা পর্বতের চূড়ায় উঠতে। যেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনের বড় একটি অংশ ধ্যান সাধনায় ব্যয় করেছেন।
অনেক গবেষকই তাদের গবেষণায় হেরা পর্বতে মহানবী (সা.) কিভাবে ধ্যান সাধনা করেছেন সেটা জানার চেষ্টা করেছেন। সুফিবাদের শাহেন শাহ্ মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি (র.) এ বিষয়ে তার বিখ্যাত গ্রন্থ ফতুহাতে মক্কীতে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেছেন। মহান আল্লাহর দাস-দাসীরা দাসত্বের চূড়ান্ত স্তর অতিক্রম যখন করেন তখন পরম করুনাময় তাদেরকে তার দয়ার চাদর দিয়ে আবৃত করে ফেলেন। তখন তারা দুনিয়াতে বসেই জান্নাতের স্বাদটা পেয়ে যান। সকাল সন্ধ্যায় তারা বৃক্ষের মতো পরম করুনাময়ের কাছে মাতা নত করার কৌশলটা জেনে যান। তারপর তারা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান। মৃত্যুর পূর্বেই তারা মৃত্যুর স্বাদ পেয়ে যান। তারপর তাদের জন্য সাধনার দরজা খুলে দেওয়া হয়। তখনই তারা হেরা পর্বতে সাধনার কৌশলটা জেনে যান। এই সৌভাগ্যবান তারাই যাদের জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর শিক্ষা রয়েছে। ক্ষুধা ও তৃষ্ণার সময়ও তারা সন্তষ্ট অবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে থাকেন অর্থাৎ বৃক্ষলতা যেভাবে আল্লাহর দাসত্ব করতে থাকে ঐ মানুষটাও একই রকম দাসত্ব করার কৌশলটা জেনে যায়, এরই নাম জিকির।
এই জিকিরকারীরা সকাল সন্ধ্যায় প্রভুর বন্দনায় নিজেদের জীবন, নিজেদের সম্পদ ব্যয় করতে থাকেন, এদের অন্তরটা মহান আল্লাহ কোমলতায় পরিপূর্ণ করে দেন। তাদের অন্তর থেকে অতৃপ্তি দুর করে দেন। এদের একটাই স্বপ্ন থাকে, মহান আল্লাহর দিদার। যারা দুনিয়াতে বসে আসসালাতু মেরাজুল মোমেনিন এর অর্থ বুঝতে পেরেছেন, শুধু তারাই আল্লাহর দিদার উপলব্ধি করতে পারবেন। এরাই হেরা পর্বতের সাধক। এদের জন্যই মহান আল্লাহ সাধনার জগত তৈরি করেছেন।
লেখক : কলামিস্ট
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন