আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে সুচির নতুন কৌশল
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার দ্বৈত নীতির আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ এড়াতে নতুন কৌশলও নিয়েছে তারা। শান্তিতে নোবেল জয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির মুখপাত্র রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিলম্বের অভিযোগ এনেছেন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর যে নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে, তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ঘটনাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেশটিতে ফিরিয়ে নিতে। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক বিশ্বের দৃষ্টি ফেরাতে তড়িঘড়ি করে ১৯৯৩ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুসারে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ এতে রাজি না হওয়ায় মিয়ানমার উল্টো বাংলাদেশকে দোষারোপ করছে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক ওয়ালি-উর রহমান বলেছেন, সুচির বক্তব্যেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে দ্বৈত নীতি লক্ষ্য করা গেছে। মিয়ানমার এর স্থায়ী সমাধান চায় না। তারা ১৯৯৩ সালের চুক্তির আলোকে গোঁজামিল দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেবে। ওই চুক্তি অনুযায়ী খুব কমসংখ্যক রোহিঙ্গাকেই দেশটিতে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে। কিন্তু আমাদের জন্য এই বিশাল বোঝা টানা সম্ভব হবে না। তাই মিয়ানমারের কথায় কান না দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে স্থায়ী সমাধান করা দরকার।
কূটনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ জমির বলেছেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গা ইস্যুতে বরাবরই এই কাজ করে আসছে। তারা পরিকল্পিতভাবে রাখাইনকে রোহিঙ্গা শূন্য করতে চায়। এবার আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে দেশটি নতুন কৌশল নিয়েছে। বাংলাদেশকে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। মিয়ানমারের দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মিয়ানমারের দ্বৈতনীতির বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আনান কমিশনের সুপারিশ এবং রোহিঙ্গাদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে আলোচনায় বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ]