ভারত-চীনের পর রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কে এগুচ্ছে বাংলাদেশ
তরিকুল ইসলাম: ভারত-চীনের পর রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যেতে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটির সঙ্গে টেলিকম ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক এবং সংবাদ সংস্থা বাসস ও রাশিয়ার ইথার তাসের মধ্যে ইতোমধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দিনক্ষণ এক্ষুনি নির্দিষ্ট না হলেও ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ আসতে পারেন রুশ প্রধানমন্ত্রী। তার সফরকে ঘিরে সমঝোতা স্মারক এবং ২৫টি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিগুলোর বেশির ভাগই চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে। রুশ প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এলেই এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এদিকে রাশিয়া এবং তার সহযোগী ইউরেশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা চাচ্ছে ঢাকা। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পাশাপাশি রুশ প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ার অনুরোধের বিষয়টি ভেবে দেখছে রাশিয়া। সহযোগিতার বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে গত মার্চ মাসে একটি আন্তঃসরকার কমিশন গঠন করা হয়। বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহায়তার বিষয়ে কমিশন তাদের কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছে। কূটনীতিকরা বলছেন, উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। বিগত দুই বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার। রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে একাধিক রাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করলেও সরকার রাশিয়ার সঙ্গেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যায়। এছাড়া রাশিয়া থেকে এক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে বাংলাদেশ। উভয় দেশের পার্লামেন্টের মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও ঢাকা-মস্কোর ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। ৭৫ এর পট-পরিবর্তনের পরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, স্নায়ুযুদ্ধ-উত্তর বিশ্বের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয়সহ নানা কারণে সে সময় ঢাকা-মস্কো সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সম্পর্ককে নতুন পর্যায়ে নেয়ার যে উদ্যোগ চলছে তাতে বাণিজ্যের চেয়ে রাজনীতি, জ্বালানি ও কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়গুলোতে দুইপক্ষ বেশি মনোযোগী। দেশটিতে ভøাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়া পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হয়। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি