আবেগ ও দায়িত্বহীনতাবোধ থেকে এসব হত্যাকা- : মনোবিজ্ঞানী
মবিনুর রহমান : রাজধানীতে গত সপ্তাহে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ৩ টি ঘটনা নগরবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বাড্ডায় বাবা-মেয়ে ও কাকরাইলে মা-ছেলে হত্যা। এছাড়াও বুড়িগঙ্গা সেতুতে ঝাপ দিয়ে স্বামী-স্ত্রী যুগলের আত্মহত্যা সামাজিক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এসব বিষয়ে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সহকারি অধ্যাপক মেখলা সরকার ।
তিনি জানান, আমাদের ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। গত ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ইন্টারনেটের কারণে আমাদের সম্পর্কগুলোয় বড় ধরণের পরিবর্তন চলে আসছে। জীবনযাপনে পরিবর্তন চলে আসছে। আমরা পরস্পরকে সময় দেয়া কমিয়ে দিয়েছি। আমরা যে কোন পারিবারিক অনুষ্ঠানেও সেলফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এতে আমাদের মৌলিক সম্পর্কগুলোয় দুরত্ব তৈরী হচ্ছে।
এছাড়াও গ্লোবালি আমরা খুব অস্থির হয়ে যাচ্ছি। প্রাথমিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কে ক্ষেত্রে আসলে এসব খুনের ঘটনা ঘটার কথা না। এসব খুন যে পরিকল্পিত তা কিন্তু নয়। হঠাৎ পরিস্থিতির অবনতির কারণে এসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। যা ঘটছে আবেগ ও দায়িত্বহীনতাবোধ থেকেই ঘটছে। যারা এসব ঘটাচ্ছে তাদের আবেগের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা কম। মানুষের যে আত্মক্ষমতা থাকে তা নিয়ন্ত্রণে না থাকলেই এমনটা ঘটে। কিন্তু মায়ের সাথে সন্তানের যে সম্পর্ক থাকে সেটাযে নষ্ট হয়ে গেছে তা বলা যাবেনা। এসব ঘটনা স্বাভাবিক নয়। সবটাই অনাকাঙ্খিত ঘটনা। তাই আমাদের মৌলিক সম্পর্কগুলোয় যে একটা বিশাল দুরত্ব তৈরী হচ্ছে তা আমি মনে করিনা।
তিনি বলেন, আমাদের আসলে ভাবা উচিত আমরা কিসে ভাল থাকবো। এবং আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কগুলো যত সুদৃঢ় করবো ততই আমাদের মানসিক অস্থিরতা কমে আসবে। সামাজিক নিরাপত্তা আমাদের আত্মিক নিরাপত্তা দেয়। মানসিক নিরাপত্তা দেয়। সেই নিরাপত্তাই আমাদের সাময়িক লোভনীয় হাতছানি থেকে সরিয়ে রাখে। এর থেকে প্রতিকার পেতে আমাদের সচেতন হতে হবে। পরিবারকে সময় দিতে হবে। একে অপরকে বুঝতে হবে। বিপদ-আপদে এগিয়ে আসতে হবে।
এসব চর্চা শুরু হতে পারে শিশুকাল থেকেই। একটা শিশুকে ভালো পরিবেশ দিতে হবে। বিভিন্ন মানুষের সাথে মিশতে দিতে হবে। তাহলেই দায়িত্ববোধ তৈরী হবে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন