প্যারাডাইস পেপারসে বিশ্বনেতাদের নতুন কেলেঙ্কারি ফাঁস
পানামা পেপারসের প্রায় দেড়বছর পরে আবার নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে প্যারাডাইস পেপারস। বারমুডার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাপলবির গ্রাহকদের ফাঁস হওয়া ১ কোটি ৩৪ লাখ নথি ঘেঁটে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেষ্টিগেটিভ জার্নালিজম গত রবিবার এই তথ্য ফাঁস করেছে। এতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজসহ বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের নাম রয়েছে। আমরা প্রধানত এটা জানি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শাসকরা, বিশেষ করে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের শাসকরা, তাদের একটা প্রধান কাজই হচ্ছে নিজের স্বকল্প উপার্জন করা। ব্যক্তিমালিকানার ধারক, বাহকরা তারা নিজস্ব পুঁজিতেই বিশ্বাস করে। নিজেদের পুঁজি যে কোনো প্রকারে বাড়ানোর চেষ্টা করে। এটা শুধু এখন নয়, অনেক দিন ধরেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, পুঁজির পরিমাণ এমন হয়ে গেছে যে, দেশের গ-ি ছাড়িয়ে, দেশে শুধু নয়, এমন এমন জায়গায় তারা রাখে, সেখানে তাদের সুযোগও করে দেওয়া হয়। এর আগে পানামা কেলেঙ্কারিতে এসমস্ত ঘটনা আমরা জেনেছি। এবং এতে যে বিশ্ব নেতাদের নাম আসছে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এটাই বরং স্বাভাবিক। আমার মনে হয়, সবচেয়ে দেখার ব্যাপার হলো, আমাদের দেশের কিছু নাগরিক। ইতোমধ্যে আমরা জানি, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দেশে বেআইনী পথে অর্থ অর্জন করে, বেআইনী কথাটা এই জন্য বললাম, আমার বিবেচনায়, আইনী পথে অর্থ উপার্জন করলে, তার সম্পদের পরিমাণ এমন মোটেই হতে পারে না, যা বিদেশে সে পাচার করতে পারে। সে কারণে আমি বেআইনী কথাটা বললাম। এবং যারা এ কাজটা করে তারা বিদেশে এমন এমন জায়গায় অর্থ পাচার করে, যা আমাদের দেশের জন্য অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর। আমরা সাধারণ ভাবে কানাডার বেগম প্যালেসের কথা জানি, সেখানে অনেকে টাকা পাচার করে এবং তাদরে স্ত্রীদের রেখেই ওই টাকা পরিচালনা করে। আমরা মালোশিয়ার সেকেন্ড হোমসের কথা জানি এবং গত ছয় মাসেও সেকেন্ড হোমসেও কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের টাকার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। এরা বাংলাদেশটাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে কিন্তু বাংলাদেশটাতে তারা আছে অর্থ উপার্জনের জায়গা হিসেবে। সেই অর্থটা নিয়ে তারা বিদেশে যায়। আমার মনে হয়, সরকারের উচিত এখনই এই ব্যাপারে সতর্ক হওয়া, যেন এই দেশের অর্থ পাচার না হয়। এখন প্যারাডাইস পেপারে যদি আমাদের দেশের কারও নাম আসে, তাদের অবৈধ টাকা উদ্ধার করা এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা নেওয়া।
পরিচিতি : সম্পাদক, সিপিবি
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ