জাপানে পূর্বেকার ৩ প্রেসিডেন্টের প্রথা ভাঙ্গলেন ট্রাম্প
প্রিয়াংকা আচার্য্য : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি এশিয়া সফরে জাপানের টোকিওর ইম্পেরিয়াল প্যালেসে স¤্রাট আকিহিতোর সঙ্গে সোমবার সাক্ষাৎকালে তিনি মাথা নুইয়ে ‘বো’ না জানিয়ে কেবল হাত মিলিয়ে এবং কিঞ্চিত মাথা নাড়িয়ে অভিবাদন জানান। জাপানের স¤্রাটের সঙ্গে এমন ঘটনা এর আগের ৩ মার্কিন প্রেসিডেন্ট করেননি। এ ঘটনায় তাই আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
প্রথমবার, ১৯৮৯ সালে ‘বো’ জানিয়ে সিনিয়র বুশ কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে আকিহিতোর বাবা হিরোহিতোর অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে তার মৃতদেহের উদ্দেশ্যে মাথা নত করে বো জানিয়েছিলেন। কারণ হিরোহিতো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে নাৎসী জার্মানির সঙ্গে সেনাজাটের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলেন এবং তার নির্দেশেই ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর হাওয়াইয়ের পার্ল হার্বারে ইম্পেরিয়াল জাপানিজ নেভি-এয়ার সার্ভিস হামলা চালিয়ে প্র্রায় ২ হাজার মানুষ হত্যা করে। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়। সমালোচনা এতোটাই তীব্রতর ছিল যে পরদিনই সিনিয়র বুশ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মাথা নুইয়ে বো করাটা সম্মান জানানোর প্রতীক বলেই তিনি তা করেছেন এর বেশি কিছু না।
দ্বিতীয়বার, ১৯৯৪ সালে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক ডিনার অনুষ্ঠানে জাপান স¤্রাট আকিহিতোকে সামান্য মাথা ঝুঁকিয়ে বো জানিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। তৃতীয়বার, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালে জাপান সফরকালে আকিহিতোকে মাথা নুইয়েই এবং হাত মিলিয়ে অভিবাদন জানান। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে একের পর এক প্রটোকল ভাঙ্গা ডোনাল্ড ট্রাম্প তা করেননি। সফররত একজন মার্কিন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প ‘এমনটা করেন না- কখনো করেননি।’
যদিও মার্কিন একজন প্রেসিডেন্টের জাপানী রীতিতে মাথা নুইয়ে বো করা বা না করা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে ট্রাম্পের পূর্ববর্তী ৩ প্রেসিডেন্টই এ রীতি অনুসরন করে গেছেন। জাপানের জাতীয় পর্যটন গাইডের তথ্য মতে, ঘাড়কে ৪৫ ডিগ্রির নিচে নামিয়ে ‘বো’ করাকে তাদের ভাষায় ‘সাইকেইরেই’ বলা হয় যা তাদের রীতি অনুযায়ী সৌহার্দ প্রদর্শনের গভীরতম প্রকাশ। আর কোমেরর যত নিচ থেকে মাথা নুইয়ে ‘বো’ করা হয় ততটাই শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা সেই ব্যক্তির নিকট প্রকাশ পায়।