ধর্ষিতাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই অনেক সময় হয়রাণি করা হয়
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : ধর্ষনের মামলা হয় ঠিকই কিন্তু এসব মামলা শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যায়। ধর্ষনের ঘটনা থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যন্ত যেভাবে ধর্ষিতা বা ভিকটিম হয়রাণির শিকার হয়, তাতেই বিচারের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। বারবার নির্যাতিত মেয়েটিকে ধর্ষন বা অন্য যে কোন এরপর পৃষ্ঠা ৭, কলাম
(শেষ পৃষ্ঠার পর) নির্যাতনের বিষয় বর্ণনা করতে হয়। ফলে অনেকেই এসব হয়রানি থেকে মুক্ত হতে মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোখলেসুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে যেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তা সত্যিই আপত্তিকর। এভাবে হলে অনেকে মেয়ে ধর্ষনের শিকার হওয়ার পরও আদালতে আসবেনা। কারণ বার বার ধর্ষনের ঘটনা বর্ণনা করে অসুস্থ হয়ে পড়বে এসব মেয়েরা।
মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, যেভাবে ভিকটিমকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা হয় বারবার তাতেই অনেকে মামলা তুলে নেয়। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের একটি জরিপের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, বিচার প্রক্রিয়া খুব অস্বস্তিদায়ক। প্রভাবশালীরা ভিকটিম এবং তার পরিবারকে ভয় দেখিয়ে সমঝেতা করার চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভয়ে ভিকটিম মামলা তুলে নেয়।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবীর সদস্য অ্যাডভোকেট দিলরুবা শারমীন বলেন, সবচেয়ে বেদনার এবং অস্বস্তিকর বিষয় হলো, বারবার ধর্ষিতার জবানবন্দী নেওয়া। এটাকে যদি সহজ করা যায় এবং ভিকটিমকে যদি বারবার ধর্ষনের শিকার হতে না হয় তাহলে মামলাগুলো উঠে যেতো না। আবার সাক্ষীদেরও জোর করা হয়। তাই এই সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনতে হবে। নারীনেত্রী ও নিজেরা করি প্রতিষ্ঠানের প্রধান খুশি কবীর, ভিকটিমকে বারবার ঘটনায় ফিরিয়ে নেওয়ার মতো অমানবিক আর কিছু হতে পারে না। ভিকটিম ও তার পরিবারকে সামাজিকভাবেও চাপের মধ্যে রাখা হয়। প্রতিমুহুর্তেই যেনো মেয়েটি ধর্ষনের শিকার হয়।
মানবাধিকার ও নারী অধিকার বিষয়ক সংস্থা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাব মতে, ২০১৬ সালে নভেম্বর পযন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৭৫ জন। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৩৪ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩১ জনকে, ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৪০ জনকে।