আশান্বিত হই, প্রতীক্ষা করি এই বুঝি উৎপল এলো : বাবা ১ মাস ধরে নিখোঁজ, নিজেকে অসহায় লাগে : পীর হাবিব
বিশ্বজিৎ দত্ত : প্রতীক্ষা করা জীবনে বড় শাস্তি। প্রতিদিন আমি, আমার স্ত্রী প্রতীক্ষা করিÑ এই বুঝি উৎপল এলো। ফোন এলেও আশান্বিত হই, কেউ হয়তো বলবেনÑ উৎপলকে পাওয়া গেছে। কিছুই হয় না। পুত্রের জন্য প্রতীক্ষা করছি। গতকাল এভাবেই টেলিফোনে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন উৎপলের বাবা চিত্তরঞ্জন দাস।
আজ ১ মাস হয়ে গেলÑ উৎপল দাস নিখোঁজ। অক্টোবরের ১০ তারিখে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অফিস করেছে সে। পরের দিন থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ। হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে গেল সে। থানায় জিডি করেছেন উৎপল যে অনলাইনে কাজ করতেন পূর্ব-পশ্চিমের সম্পাদক খুজিন্তা নূর ই নাহরীন। গতকাল টেলিফোনে তিনি বলেন, উৎপল দাসের কোনো খবর আমরা পাইনি। র্যাব, পুলিশ কমিশনার ও রাষ্ট্রের ইনফ্লুয়েনশিয়ালদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সাহায্য চেয়েছি উৎপলকে উদ্ধার করতে। এখনো কোনো খবর পাইনি। আমরা উৎপলের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। তাদের বিভিন্নভাবে সান্ত¡না দেওয়ার চেষ্টা করছি। মাঝখানে একটি উড়ো খবর এসেছিলÑ উৎপল দাস টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হাসপাতালে ভর্তি। আমরা সেখানে খবর নিয়েছি। পুরোটাই বানোয়াট ছিল।
উৎপলকে ফিরে পেতে আন্দালন করছে তার সহকর্মী সাংবাদিক সমাজ। মানবন্ধন করেছে। সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়ে উৎপলকে ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলোও।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আমরা উৎপলের বিষয়ে আজ বা আগামীকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। আমাদের উদ্বেগের কথা জানাব। অতিদ্রুত উৎপল দাসকে যেন পুলিশ খুঁজে বের করতে পারে সে বিষয়টিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাব। উৎপল দাসের ব্যাপারে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সবসময় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার মোবাইল ফোনটি মাঝে মাঝে সচল পাওয়া যাচ্ছে। আমারা আশাবাদী তাকে আমরা ফিরে পাব।
পূর্ব-পশ্চিমের প্রধান সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান জানান, উৎপলকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি এটা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সাধ্যমতো। তথ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছি যেন উৎপলকে ফেরত পাই। উৎপলের মা-বাবা যখন টেলিফোন করেন তখন নিজেকে অসহায় মনে হয়। কান্নায় গলা আটকে যায়। কথা বলতে পারি না। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী