ভালোবেসে নামাজ আদায়
মোস্তফা কামাল গাজী
ঈমানে পরেই নামাজের স্থান। অন্যান্য ইবাদত অপেক্ষা নামাজের গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে অধিক এসেছে। পবিত্র কোরআনে মোট ৮৩ বার নামাজের আলোচনা এসেছে। নামাজ ফরজ হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন, ‘হে নবী! আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মুমিন তাদের বলুন, নামাজ কায়েম করতে’। (সুরা ইবরাহিম : ৩১)
অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা লোকদের সঙ্গে উত্তমভাবে কথা বলবে এবং নামাজ আদায় করবে।’ (সুরা বাকারাহ : ৮৩)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তুমি বলে দাও, আমার রব ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন। তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় তোমাদের মুখম-ল স্থির রেখ।’ (সুরা আরাফ : ২৯) সুরা বাকারার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা মুত্তাকিদের পরিচয় দিতে গিয়ে ইরশাদ করেন, ‘যারা অদৃশ্যের বিষয়গুলোতে ঈমান আনে এবং নামাজ কায়েম।’ (সুরা বাকারা : ৩) আল্লাহ তায়ালা নামাজের উপকার সম্পর্কে ইরশাদ করেন, ‘এবং নামাজের পাবন্দি করো দিনের দু’প্রান্তে ও রাতের কিছু অংশে। নিঃসন্দেহে সৎ কাজসমূহ অসৎ কাজসমূহকে মিটিয়ে দেয়।’ (সুরা হুদ : ১১৪) নামাজের ব্যাপক কল্যাণসমূহের উল্লেখযোগ্য একটি হলো নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, ‘নামাজের পাবন্দি করো। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত : ৪৫)
সকল সুন্নত আর শর্তসহ খুশু-খুযুর সঙ্গে নামাজ আদায় করলে এই নামাজ সব ধরনের অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে নামাজিকে বিরত রাখে। আর খুশু-খুযুর সঙ্গে নামাজ আদায়কারীদের সুসংবাদ দিয়ে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় সব মুমিন নামাজ আদায় করে।’ (সুরা মুমিনুন : ১-২) এ ব্যপারে রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘বান্দা ও কুফরের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ (মুসলিম : ১৪৩৩) হজরত উবাদা ইবনে সামির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রসুল (সা.) আমাদের সাতটি অসিয়ত করেন, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ হলো- তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। যদিও তোমাকে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয় বা অগ্নিকু-ে নিক্ষেপ করা হয়। আর ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করবে না। কেননা যে ইচ্ছা করে নামাজ ছেড়ে দেয় সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়।’ (মুসলিম : ১৪৩৭) অন্যত্র রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুমিন-মুসলমান অজুর জন্য মুখম-ল ধৌত করলে পানির শেষ ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহ বের হয়ে যায়। দুই হাত ধৌত করলে পানির শেষ ফোঁটার সঙ্গে হাতের গুনাহ বের হয়ে যায়। দুই পা ধৌত করলে পা দ্বারা কৃত গুনাহ পানির শেষ ফোঁটার সঙ্গে বের হয়ে যায়। এমনিভাবে অজুর সময় সে যাবতীয় গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (মুসলিম : ১৪৪৩)। নামাজ বান্দাকে আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী করে দেয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা সেজদার সময় তার মহান প্রতিপালকের সবচেয়ে নিকটবর্তী থাকে।’ (মুসলিম : ১৪৪০) সুতরাং আসুন, আমরা সবাই খুশু-খুজুর সঙ্গে নামাজ আদায়ের অভ্যাস গড়ে তুলি।