সৌদি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে ইরানের চিঠি
পার্সটুডে : জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি গোলাম আলী খোশরো এই সংস্থার মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানের কাছে লেখা আলাদা আলাদা চিঠিতে সৌদি আরবকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার পাশাপাশি অন্য দেশের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের হুমকি দেয়া থেকে বিরত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের ভিত্তিহীন হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সৌদি কর্মকর্তাদের বক্তব্য ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক এবং অন্য দেশের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের হুমকি নিষিদ্ধ করে পাস হওয়া জাতিসংঘ ঘোষণার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সৌদি কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দেয়া ছাড়াও এ অঞ্চলের দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও ইয়েমেনে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তুলেছেন। জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি তার চিঠিতে আরো বলেছেন, ইয়েমেনের আকাশ, স্থল ও সমুদ্র পথে সৌদি অবরোধের কারণে দুর্ভিক্ষ ও কলেরা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত এইসব অপরাধযজ্ঞের জন্য সৌদি আরবের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো অজুহাতেই ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি সামরিক আগ্রাসন গ্রহণযোগ্য নয়। সৌদি আরব যদিও পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিকে ফের ক্ষমতায় বসানোর কথা বলে হামলা চালাচ্ছে কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। সৌদি আরব ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ থেকে ইয়েমেনে হামলা শুরু করে এবং যে উদ্দেশ্যেই তারা হামলা চালাক না কেন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তা অবৈধ। জাতিসংঘ ঘোষণার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের চতুর্থ ধারা অনুযায়ী এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে হুমকি কিংবা বল প্রয়োগ করতে পারবে না এবং এটা জাতিসংঘের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের খেলাপ। তবে জাতিসংঘ আইনের ৫১ অনুচ্ছেদে যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার জন্য বল প্রয়োগের এখতিয়ার কেবল নিরাপত্তা পরিষদের হাতে রয়েছে। কিন্তু এ দু’টি নীতিমালার কোনটিতেই সৌদি আরব পড়ে না এবং সৌদি আগ্রাসন সম্পূর্ণ বেআইনি। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের আরেকটি দিক হচ্ছে, নিজ ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতিগুলোর অধিকারের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছে রিয়াদ। ভিয়েনা কনভেনশনের ৫৩ নম্বর অধ্যায়েও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বক্তব্য এসেছে। কিন্তু, সৌদি আরব আন্তর্জাতিক এসব আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে বরং ইয়েমেনে হস্তক্ষেপের জন্য তারা ইরানকে দায়ী করছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ