নির্বাচনে মনোনয়নের সবুজ সংকেত
ড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
উজিরপুর-বানারীপাড়া নিয়ে বরিশাল-২ আসন। এ নির্বাচনি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এ আসনে এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বর্তমান এমপি তালুকদার মো. ইউনুছ। এ ছাড়া সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনি, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহে আলম, বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌর মেয়র সুভাষ চন্দ্র শীল, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রহমান খান এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজু এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের পেতে মাঠে নেমেছেন এক ডজন প্রার্থী। এ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই এমপি। জমজমাট নির্বাচনি তৎপরতা শুরু করেছেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিশ্বাস বিল্ডার্সের মালিক নজরুল ইসলাম দুলাল। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যুদ্ধে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কল্পনা আক্তার, প্রিয়ঙ্কা গ্রুপের মালিক সাইদুর রহমান সজল, সাবেক সচীব শাহাব উদ্দীন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ারদার। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের তৎপরতায় এ আসনে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনি হাওয়া।
তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ নিয়ে রংপুর-২ আসন। নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। তিনি আবারও মনোনয়ন চান। তবে এ আসনে খুব নির্বাচনি তৎপরতা করছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরী নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর লবিয়িং চালাচ্ছেন। রয়েছেন আরো কয়েকজন প্রার্থী।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে আবারও মনোনয়ন চান কণ্ঠশিল্পী বর্তমান সংসদ মমতাজ বেগম। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সাবেক ফুটবলার দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল, ব্যবসায়ী ও জেলা কমিটির সদস্য গোলাম মনির হোসেন, সিংগাইর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান হান্নান।
ফরিদপুর জেলায় বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তরুণ প্রার্থীরাও মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নানা কর্মসূচিতে সমাবেশ-পাল্টাসমাবেশও হচ্ছে আওয়ামী লীগে। গ্রুপিংয়ের কারণে মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালী) আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে চলছে জটিল সমীকরণ। এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বেশ চাপের মধ্যেই রয়েছেন। তিনি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। তবে মনোনয়ন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও শক্ত প্রার্থী রয়েছেন। কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন নির্বাচনি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও আমিন জুয়েলার্সের কর্ণধার কাজী সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার, শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া।
খুলনা-৫ আসনে (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আওয়ামী লীগের আবারও প্রার্থী হতে চান বর্তমান সংসদ সদস্য ও মৎস্য প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে বার বার নেতিবাচক রিপোর্ট আসায় তিনি চাপের মধ্যে আছেন। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহাবুব উল ইসলাম। এ আসনে নির্বাচনি তৎপরতা চালাচ্ছেন আরো কয়েকজন প্রার্থী।
সদর-বারহাট্টা নিয়ে নেত্রকোনা-২ আসনে বর্তমান সংসদ ও যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এমপি আবারও মনোনয়ন চান। এ আসনে গণসংযোগ করে চলেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামছুর রহমান ওরফে ভিপি লিটন, সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান খসরু, সাবেক ছাত্রনেতা ও চলচ্চিত্র অভিনেতা রানা হামিদ, লে. কর্নেল নূর খান (অব.), ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোস্তফা আলমগীর।
আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা যায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কারণ একটানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতাদের অর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে আসনভিত্তিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে বেশ বেগ পেতে হবে বলে পর্যবেক্ষক মহল ধারণা করছেন।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এ দলে প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক। কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনি এলাকায় থাকার জন্য বলা হয়েছে। প্রতিটি আসনে একাধিক জরিপের মাধ্যমে প্রার্থীদের তালিকা তৈরি হয়েছে। এলাকায় প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতা দেখেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।