সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা পুলিশকে ক্ষমতায় আসার প্রথম বাধা মনে করে
মো. নূরুল আনোয়ার
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, পুলিশ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এটা তিনি কেন বলেছেন, এর ব্যাখ্যা তিনি ভালো দিতে পারবেন। এই মন্তব্যের পেছনে কিছু কারণ নিশ্চয়ই আছে। যার জন্য তিনি এটা বলেছেন। তবে এটা ঠিক যে, আমরা যেটা বাইরে থেকে বুঝি, তা হচ্ছে আমাদের দেশে হলি আর্টিজানের ঘটনার পর থেকেই প্রকাশ্যে জঙ্গিদের কার্যকলাপ আমাদের নজরে আসছে। এর আগে আমরা কিছু সিরিজ ঘটনা দেখলাম, বিভিন্ন ধর্মের লোকজন যেমন- খ্রিস্টান, হিন্দুদেরকে দেশের নানা জায়গায় হত্যা করা হয়েছে। এর পরপরই হলি আর্টিজানের ঘটনাটা ঘটে। তারপর আবার দেখলাম কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ্ ময়দানের ঘটনা। এছাড়া ব্লগারদেরকে মারার ঘটনাগুলো দেখলাম। এই সবগুলো ঘটনাকে যদি আমরা একসাথে মালাগাঁথি, তাহলে দেখবেন একটা ধর্মের নামে জঙ্গিবাদের বিষয় বা তাদের প্রকাশ্য কার্যকলাপ দেখাতে চেয়েছে। এবং সারা দেশে প্রচারের জন্য হলি আর্টিজানের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমরা দেখলাম, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তো আছে। যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সে সরকারকেই এসব জঙ্গিবাদ দমন করতে হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি যে, দেশের একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যারা একসময় ক্ষমতায় ছিল কিন্তু এখন নেই, তাদের এটা নিয়ে কোনো তৎপরতা নেই। প্রকাশ্যভাবে এটা বন্ধের জন্য তারা কোনো কথাই বলে না বা পরামর্শ দেয় না। এটা লক্ষ্য রাখতে হবে, যেহেতু একটি সরকার ক্ষমতায় আছে, তাকেই এই জঙ্গিবাদ দমন করতে হবে। আর এটা দমন করার জন্য সরকারের প্রথমেই যে বাহিনী বা প্রশাসন প্রয়োজন তা হলো পুলিশ। আর পুলিশকে এই ধরনের কার্যকলাপকে বন্ধ করতে হলে বা দমন করতে গেলে আইনকানুন মানা অবশ্যই প্রয়োজন। তারপরও কখনো কখনো হয়তো বা পরিস্থিতি ও কোনো জায়গার কারণে কিছু ক্ষেত্রে আইন যথাযথভাবে মানা হয় না। অথবা মানা সম্ভব হয়নি। স্বাভাবিক ভাবে দেশে যেহেতু রাজনৈতিক বিভাজন আছে আর সরকারের প্রতিষ্ঠান পুলিশ, এই পুলিশকেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা মনে করে তাদের ক্ষমতায় আসার আগে প্রথম বাধা। আমি রাজনৈতিক কথা বলছি না। এটা সত্য কথা বলছি। অতএব, পুলিশের কার্যকলাপকে যদি প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, তাদের যদি প্রচুর সমালোচনা করা যায়, সেটা বিদেশে প্রচার কারা যায়, তাহলে সরকার চাপের মুখোমুখি হয়। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। সেজন্য আমি মনে করি, যদি কেউ লাঠি নিয়ে মারতে আসে, তাহলে তাকে কিভাবে ঠেকাবেন তা অবস্থার উপর নির্ভর করবে। পুলিশের কৌশলও অনেকটা এরকম। কেউ কেউ বলে যে, পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে। এটা ঠিক নয়। কারণ, প্রতিটা কেইসকে বিশ্বাস করতে হবে। ঘটনাগুলোকে আমাদের আগে বুঝতে হবে। তারপর আলোচনা-সমালোচনা করতে হবে।
পরিচিতি : সাবেক আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ