হাজার কোটি টাকার মুনাফার তথ্য গোপন করেছে বিপিসি
নাফরুল হাসান : হাজার কোটি টাকার মুনাফার তথ্য গোপন করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করর্পোরেশন (বিপিসি)। লাভের মুখ দেখার পরও ওয়েবসাইটে আয়-ব্যয়ের হিসাব হালনাগাদ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। আবার আন্তর্জাতিক সংস্থা দিয়ে অডিট করাতেও রাজি নয় সংস্থাটির প্রধান। এমনকি নিজস্ব অডিট রিপোর্টও প্রকাশ করছে না প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনগণের করের টাকায় পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক সংস্কার জরুরি।
জ্বালানি তেলে সরকার যে হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে তা নীতিনির্ধারকরা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করতেন। তবে লোকসানের সে গল্প বদলে গেছে। লোকসানের জায়গায় এসেছে লাভের অংক। বছরে এখন কমপক্ষে ৬ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে বিপিসি। যদিও বিপুল পরিমাণ লাভের এই তথ্য বিপিসি গোপন করছে। তাদের ওয়েবসাইটেও মিলছে না লাভ-লোকসানের হিসাব। যদিও বিপিসি তাদের নির্দিষ্ট ওয়েবপেজটি হালনাগাদ করছে। এ সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিষ্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘২০১০-১১ সালের পরের ২০১৫-১৭ সালের মাঝের কোনো তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে নেই।’
এদিকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘বিপিসি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সেক্টরের সবচেয়ে অসহ্য একটা একাউন্ট। এখানকার হিসাব এমনভাবে দেওয়া, যা জনগণ বুঝে না এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ও জানে না তারা কিভাবে কি কাজ করবে।’
বিপিসির অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে অডিট করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তারা। তবে সেটি করতে রাজি হয়নি বিপিসি।
এ সম্পর্কে বিপিসির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমতুল মুনিম বলেন, ‘যদি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে চায়, তাহলে তাদের প্রয়োজনে নিজেরা অডিট করে নিতে পারবে। তাহলে অহেতুক কেন বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে অডিট করিয়ে অর্থ ব্যয় করব।’
এদিকে কনজ্যুমার এসোসিয়েসনের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যায়সঙ্গত কথা তাদের মানতে হবে। আর অন্যায় নিয়ে কথা বলা তো কোনো প্রতিষ্ঠানেরই সুযোগ নেই।’ সূত্র : যমুনা টিভি, সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ