দু মন্ত্রণালয়ের টানাটানি প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীতকরণ কার্যক্রম বন্ধ
তরিকুল ইসলাম সুমন : শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের টানাটানিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীতকরণ কার্যক্রম থেমে গেছে। শিক্ষানীতি অনুযায়ী পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা (৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) ৬২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রায় এক বছর আগে মৌখিকভাবে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করার উদ্যোগের পরেই এ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এই সিন্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এক চিঠিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর বাস্তবায়ন এবং ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে গত ১৬ মে’র এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, মন্ত্রিসভার পর্যালোচনা ও সিন্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিন্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিন্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে প্রেরিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমুহে ৬ষ্ঠ শ্রেণি চালুর অনুমতি প্রদানের আবেদনসমূহ বিবেচনার সুযোগ নেই এবং প্রাথমিক শিক্ষা ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে, যা নির্দেশক্রমে অবহিত করা হলো।
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিদ্যমান অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী চালু করা সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে প্রাইমারি স্কুলে মাত্র তিনটি করে ক্লাস রুম ও একটি করে অফিস রুম রয়েছে। রুমগুলোও খুব ছোট, মুরগির খাচার মতো। শিক্ষকও আছেন দুই-তিনজন করে। অষ্টম শ্রেণী চালু করার আগে অবকাঠামো বৃদ্ধি ও শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করতে হলে নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, জনবল, ব্যবস্থাপনা- সবকিছুই নতুন করে সাজাতে হবে। নিয়োগ দিতে হবে স্নাতক ও বিএড ডিগ্রিধারী শিক্ষক। কিন্তু ২০১০ সালে শিক্ষানীতি তৈরি করা হলেও এটি বাস্তবায়নে জাতীয় বাজেটে আলাদা কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। এদিকে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক এবং জাতীয়করণ হওয়া প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মানসম্মত পাঠদান সম্ভব নয়। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু