এখন মানুষ কষ্ট করে হলেও তাদের সন্তানদের প্রাইভেটে পড়াতে চায়
যেহেতু সরকারি স্কুলের সংখ্যা খুব লিমিটেড, ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করাতে হলে কোনো না কোনো স্কুলে তো যেতে হবে। আর সে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বা নিজেদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষে প্রাইভেট স্কুল, কলেজগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে যত বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলো কিন্তু বেশির ভাগই প্রাইভেট। অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডের মতো বিশ্বিবিদ্যালয়গুলোও প্রাইভেট। সুতরাং প্রাইভেট হিসেবে যদি একটি প্রতিষ্ঠান চলে, খারাপের কোনো কারণ নেই। প্রাইভেটে ভর্তি হওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা কম্পিটিশন করে পড়ালেখা করে। সরকারের উচিত প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো যেন সুন্দরভাবে রান করতে পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু আমরা দেখেছি কি, যেন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পলিসি পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। সম্প্রতি দেখা গেছে, সরকারি স্কুলে আসন বাড়িয়েছে, দুই সিফটে স্কুল হচ্ছে। এখন তারা ছাত্র-ছাত্রী পাচ্ছে। তাতে করে প্রাইভেট স্কুলগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় সরকারিগুলো না ভালো শিক্ষা দিতে পারবে, না বেসরকারিগুলো। যার ফলে জেনারেশন টু জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হয়ে যাবে।
বেসরকারি কিছু স্কুল ভাল শিক্ষা দিচ্ছে। আর সরকারি যে কয়টা ভালো স্কুল আছে, সেখানে ভালো স্টুডেন্টরা ভর্তি হয় বলে ভাল রেজাল্ট করতে পাড়ছে। ঢাকা শহরে দেখা যায় সরকারি ধানম-ি বয়েজ স্কুলের সাথে অন্য একটা স্কুলের পার্থক্য করে দেখলে দেখা যায়, আকাশ পাতাল তফাৎ আছে। ঢাকা শহরে অল্প কয়েকটা স্কুল আছে যেগুলো ভালো অবস্থানে আছে। বাকি অনেক স্কুল আছে সেখানে পড়াশোনা নাম মাত্র, পরিবেশ নেই। বেসরকারি স্কুলগুলো যদি ভালো শিক্ষা দেয় সেখানে স্টুডেন্টরা যাবে। তার মানে এই নয় যে, সরকারিতে স্টুডেন্টরা যাবে না। বেসরকারিতে যে খরচ সেটা বহন করার সামর্থ সবার নেই। যেহেতু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বাড়ি ভাড়া, শিক্ষকদের বেতন থেকে সবকিছুই নিজেদের বহন করতে হয়, পাশাপাশি সরকারকে ভ্যাট দিতে হয়, সেই কারণে খরচ একটু বেশি। এক্ষেত্রে স্টুডেন্টরা সরকারিতে আসবে। তবে এখন মানুষ কষ্ট করে হলেও তাদের সন্তানদের প্রাইভেটে পড়াতে চায়। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারিতে ভাল শিক্ষা দেওয়া হয়।
পরিচিতি : চেয়ারম্যান, বিএসবি ফাউন্ডেশন
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ