অপব্যয়: কী বলে ইসলাম মুহাম্মাদ আবু আখতার
অপব্যয় করা আল্লাহ তায়ালার নিকট অত্যন্ত অপছন্দনীয়। তাই তিনি অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।(সুরা আরাফ: ৩১)
তিনি আল্লাহই নানা প্রকার লতাগুল্ম ও বাগান সৃষ্টি করেছেন। খেজুর বীথি সৃষ্টি করেছেন। শস্য উৎপাদন করেছেন, তা থেকে নানা প্রকার খাদ্য সংগৃহিত হয়। যাইতুন ও ডালিম বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন, এদের ফলে মধ্যে বাহ্যিক সাদৃশ্য থাকলেও স্বাদ বিভিন্ন। এগুলোর ফল খাও যখন ফলবান হয় এবং এগুলোর ফসল কাটার সময় আল্লাহর হক আদায় করো আর সীমা অতিক্রম করো না। কারণ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে আল্লাহ পছ্ন্দ করেন না। (সুরা আনআম: ১৪১)
আবূ হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহপাক তোমাদের তিনটি কাজে সন্তুষ্ট হন এবং তিনটি কাজে অসন্তুষ্ট হন। যেসব কাজে তিনি সন্তুষ্ট হন সেগুলো হল, ১. তোমরা তাঁরই ইবাদত করবে এবং তার সাথে আর কাউকেও শরীক করবে না। ২. আল্লাহর রজ্জু (অর্থাৎ কুরআন) মজবুত করে ধরবে। ৩. আল্লাহ যাকে শাসনের ভার দিয়েছেন তাকে নসীহত করবে।
যেসব কাজে তিনি অসন্তুষ্ট হন, সেগুলো হল, ১. কথা অধিক বলা। ২. অপব্যয় করা। ৩. অধিক যাচনা করা (ভিক্ষা করা)। (সহীহ মুসলিম)
যারা অপব্যয় করে আল্লাহপাক তাদেরকে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আতœীয়-স্বজনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। আর কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সুরা ইসরা: ২৬-২৭)
আল্লাহ তায়ালার সত্যিকার বান্দাগণ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সম্পদ ব্যয় করতে যেমন কৃপণতা করেন না। তেমনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ ব্যয় করে অপব্যয়ও করেন না। বরং তারা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পরিমান ব্যয় করে কৃপণতা ও অপচয়ের মাঝামাঝি মিতব্যয়িতা অবলম্বন করেন। আল্লাহপাক তার প্রকৃত বান্দাদের গুণাবলী বর্ণনায় বলেছেন, তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী। (সুরা ফুরকান: ৬৭) আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে অপব্যয় করা হতে রক্ষা করুন ।