সৃষ্টির প্রতি ¯্রষ্টার নজিরবিহীন অনুগ্রহ জাকারিয়া হারুন
দয়ার সাগর মহান আল্লাহ। সৃষ্টির প্রতি দয়াময় আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ণনাতীত। মানুষ অন্যায়, অপরাধের সাগরে ডুবে আছে। তারপরও তাদের শাস্তি দিচ্ছেন না। ছাড় দিয়ে রেখেছেন। যদি সে অন্যায় পথ ছেড়ে পুণ্যের পথে ফিরে আসে। পবিত্র কুরআনে দয়াময় আল্লাহ বলেন, ‘যে তওবা করে পাপ থেকে আমার পথে ফিরে আসবে এবং ভালো কাজের চর্চা করতে থাকবে, তার পেছনের জীবনের গুনাহগুলো আমি নেক দিয়ে পরিবর্তন করে দেব। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়াময়। ’ (সূরা ফোরকান : ৭০)
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন নেকি করার ইচ্ছা করে আমি তার জন্য একটি নেকি লিখি যতক্ষণ সে না করে, যখন সে করে আমি তার দশগুণ লিখি। আর যখন সে পাপ করার ইচ্ছা করে আমি তার জন্য তা ক্ষমা করি যতক্ষণ সে না করে, অতঃপর যখন সে তা করে তখন আমি তার সমান লিখি’। রাসূল (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতাগণ বলেন, হে আমার রব আপনার এ বান্দা পাপ করার ইচ্ছা করে, যদিও আল্লাহ তাকে বেশী জানেন, তিনি বলেন, তাকে পর্যবেক্ষণ কর যদি সে করে, তার জন্য সমান পাপ লিখ। যদি সে ত্যাগ করে তার জন্য তা নেকি লিখ, কারণ আমার জন্যই সে তা ত্যাগ করেছে। (সহিহ মুসলিম)
হাদিস শরিফে দয়াময় আল্লাহর অনুগ্রহের বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগৎকে সৃষ্টি করেছেন তখন একটি পুস্তকে লিখে রাখেন, আমার দয়া আমার ক্রোধের ওপর বিজয়ী হয়েছে। অতঃপর তিনি এ পুস্তকটি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন’। (সহিহ বুখারি)
দয়াময় আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার প্রিয় বান্দা! তোমরা যারা নফসের গোলামী করে নিজেদের জীবন গুনাহে পূর্ণ করে ফেলেছ, আমার দয়া ও প্রেম থেকে তোমরা নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই! আমি আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অতি দয়াল্।ু’ (সূরা জুমার : ৫৩)
হাদিসে কুদসিতে দয়াময় আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি আমাকে ডাকনি। আমার কাছে ক্ষমাও প্রার্থনা করনি। তারপরও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আর এ জন্য আমি কারও পরওয়া করিনি। শোন হে আদম সন্তান! তোমার পাপ যদি মহাশূন্যের চেয়েও বেশি হয়, আর নিজের ভুল বুঝতে পেরে যদি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। তুমি যদি জমিন ভরা পাপ নিয়ে আমার কাছে হাজির হও, আর ক্ষমা প্রার্থনা কর, তারপরও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। (সুনানে তিরমিজি)
দয়াময় আল্লাহ আপদমস্তক পাপে নিমজ্জিত বান্দার প্রতি কতো দয়ালু! এতো সৃষ্টির প্রতি ¯্রষ্টার ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত। এখনই সময় অন্যায়, ভুল ও শয়তানের ধোকা থেকে দয়াময় আল্লাহর রহমতের দিকে ফিরে যাওয়ার। তওবার রঙে জীবনকে রাঙানোর। তাহলেই জান্নাত উপযোগী হতে পারব। দয়াময় আল্লাহ আমাদের চিরস্থায়ী জান্নাতের বাসিন্দা বানান। আমিন।