ইবাদত কবুল হয় না কেন
মুফতি আবদুল্লাহ তামিম : আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, আমি মানুষ এবং জিন সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য (যারিয়াত-৫৬) ইবাদত কবুলের মৌলিক শর্ত দুটি।
এক. একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ইবাদত করা : ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কোনো পীর, দরবেশ, বুযুর্গানে দ্বীনের সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। বরং তা শিরকে পরিণত হবে। আর শিরক এমন একটি মহাপাপ যার কারণে জীবনের অর্জিত সকল নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি তারা শিরক করে তবে তারা যা কিছু করেছে, সবই ধ্বংস হয়ে যাবে (আনআম-৮৮)।
তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই (এ মর্মে) অহী হয়েছে যে, যদি তুমি শিরক করো তবে অবশ্যই তোমার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে (জুুমার-৬৫)। কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করবেন এবং তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। বস্তুত জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই (মায়েদাহ-৭২)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরীক করে মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে (বুখারী-২৮৫৬, মুসলিম ১৫৩)
দুই. রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত অনুযায়ী ইবাদত করা : আল্লাহ তা’আলা তাঁর বিধানকে বাস্তবায়ন করার জন্য মুহাম্মাদ (সা.)-কে প্রেরণ করেছেন এবং পৃথিবীর সকল মানুষকে একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে (দ্বীনের বিষয়ে) কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যর্পণ কর (নিসা-৫৯)।
বল, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হেদায়াৎপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া (নূর-৫৪)।
আর আমি যেকোনো রাসূল প্রেরণ করেছি তা কেবল এজন্য যে, যেন আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয় (নিসা-৬৪)।
যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি (নিসা-৮০)।
এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি (নিসা-১৩-১৪)।
আর যে আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করবে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণÑ যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী! (নিসা-৬৯)।
আর তোমরা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসূলেরে আনুগত্য কর যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হতে পার (নূর-৫৬)।