ধর্ষিত রোহিঙ্গা নারীদের পাশে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
লিহান লিমা : মিয়ানমার জাতিগত নিধন এবং যৌন নির্যাতনের শিকার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নারী শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসছেন হলিউড সুপারস্টার অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের বিশেষ দূত, যৌন নির্যাতনবিরোধী সংস্থা ‘প্রিভেনটিভ সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স ইনিশিয়েটিভ’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ইউএনএইচসিআর এর বিশেষ কূটনৈতিক জোলি রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের ওপর পরিচালিত যৌন নিপীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও তাদের সমর্থনের বিষয়ে নিজের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন।’
‘বাংলাদেশ আমর্ড ফোর্স ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ‘সেক্সুয়াল এক্সপ�য়টেশন অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ শীর্ষক বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের দুর্দশা নিয়ে কথা বলেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের আয়োজনে পিস কনফারেন্স-২০১৭ এর বক্তৃতায় নারী অধিকার রক্ষা ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কথা বলেন জোলি। এই সময় বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্যে তিনি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও এই সংকট মোকাবিলায় কানাডা ও যুক্তরাজ্য সরকারের ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী মানবতার প্রচার, বিশেষ করে শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করার জন্য জোলি বিশেষভাবে সমাদৃত। ২০১১ সালে জোলি পরিচালক হিসেবে জীবনের প্রথম ছবিটি তৈরি করেছিলেন বসনিয়া-হার্জেগোভিনার যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের নিয়ে। এছাড়া শিশুদের যুদ্ধ অভিজ্ঞতা তাদের স্মৃতিতে কেমন প্রভাব ফেলে তা নিয়ে মানবাধিকার কর্মী লাউঞ্জ আং-এর ‘ফার্স্ট ডে কিলড মাই ফাদার : এ ডটার অব কম্বোডিয়া রিমেম্বারস’ বই অবলম্বনে ছবি তৈরি করেছেন তিনি।
এবারের বাংলাদেশ সফরে জোলি বাবা-মা হারা এতিম রোহিঙ্গা শিশু বা রাস্তায় সন্তান জন্ম দেয়া কোনো রোহিঙ্গা নারী কিংবা মিয়ানমারের সেনাদের হাতে ধর্ষিত কোনো কিশোরীর জ্বলন্ত চোখে হয়ত খুঁজে পেতে পারেন নতুন কোনো ছবির গল্প। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন
তরিকুল ইসলাম : চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করার আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেছে জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সেখানে বলা হয়, আগামী ১৯ নভেম্বর জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গট ওয়ালস্ট্রম, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি ফেডেরিকা মগহেরিনিকে নিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আশা করা যাচ্ছে, এর একদিন আগেই উচ্চ প্রতিনিধি দলটি পৃথকভাবে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। এরপর যৌথভাবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন তারা।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর একাধিক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে মাহমুদ আলীর এটিই হবে কক্সবাজারে ক্যাম্প পরিদর্শনের প্রথম সফর। উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও কর্তৃক মানবিক সহায়তার বিষয়গুলোও প্রত্যক্ষ করবেন। আশা করা হচ্ছে এতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রতিনিধি দল একই দিনে কক্সবাজার থেকে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ