দৃশ্যপটে পদ্মা এবং একজন শেখ হাসিনা
সেই শৈশব থেকে পদ্মা নদী নিয়ে কল্পকাহিনী শুনে আসছি। পদ্মার ইলিশ মাছ জগৎবিখ্যাত। পল্লীকবি জসিমউদ্দিনের লেখা, আব্দুল আলিমের গাওয়া সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে সুধাই। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ কালজয়ী উপন্যাসের চলচ্চিত্র, একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টিকারী নদীর নাম পদ্মা। ভাঙ্গাগড়ার খেলায় কত শত, হাজার, লক্ষ মানুষ হয়েছে গৃহহারা। বাংলাদেশে সর্বস্বহারা মানুষ সৃষ্টি করত এই পদ্মা নদী। এক সময় পদ্মা নদীর নাম শুনলে মানুষ আতঙ্কিত হতো, শহর থেকে সাধারণত পদ্মা পাড়ি দিয়ে কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতেও যাওয়া হতো না। সেই ছোট্ট বেলায় ১৯৬৮ সালে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ আনতে মামাদের সাথে গিয়েছিলাম দিঘীর পারকোশা নৌকা নিয়ে, জারি-সারী গান, বাদ্যর তালে তালে মনের আনন্দে। পদ্মার ঢেউ দেখে পরান উড়ে যাওয়ার উপক্রম। সেই পরিস্থিতি লিখে বোঝানো যাবে না। সত্তরের জলোচ্ছাসে বরিশাল যাওয়ার সময় পদ্মা দেখা হয়েছিল, পরে অনেকবার। পদ্মার আগ্রাসী চরিত্র পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়েছে অনেকবার। নদীভাঙ্গন, নদীশাসন, সরকারের পর সরকার আসে যায়, পদ্মা যেন ফনা তুলে নিজ মহিমা, নিজের ইচ্ছা ধ্বংস করে চলছিল বাংলাদেশ, অভাবের কারণ হয়ে উঠে পদ্মা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় জাতির জনকের স্বপ্ন পদ্মা নদী ও পদ্মা সেতু আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির বিপ্লব ঘটাতে এগিয়ে চলছে সেতু নির্মাণ কাজ, উন্নয়ন হচ্ছে অবহেলিত অঞ্চলের রাস্তা, নির্মিত হচ্ছে শিল্পাঞ্চল। ৪২টি পিলার ৩৮ ও ৩৯ নং স্প্যাম বসেছে, দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতু, দ্বিতীয় স্প্যাম বসবে চলতি মাসে। নদী শাসনে পদ্মার ভাঙ্গন প্রতিরোধ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে বাংলাদেশে, বিশ্ব ব্যাংক অবাক। পূর্বে রাজনীতি হয়েছে, সামনেও হবে। একজন শেখ হাসিনার পরিকল্পনা, দেশপ্রেম, মানসিক দৃঢ়তা পরিবর্তন করা যায়নি। তিনি পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নেই শুরু করেছিলেন, এখন শেষ হওয়ার পথে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখিয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে বাংলার মানুষকে। পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখাতে, সফলতা ভোগ করতে ২০১৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে। জনগণকে এর সুফল ভোগ করতে হলে শক্তি যোগাতে হবে। একটি স্লোগান বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে- ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’।
লেখক : ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা : আশিক রহমান