হিন্দুদের উপর হামলার দ্রুত বিচার দাবি
সুশান্ত সাহা : রংপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ অতীতের সব হামলার বিচার ও টিটু রায়কে মুক্তির দাবি জানিয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি সংগঠন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, জাগো হিন্দু বাংলাদেশ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু সেবক সংঘ নামের বিভিন্ন ব্যানারে এসব কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এ সময় তারা রংপুরের টিটু রায়কে নির্দোষ দাবি করে তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ মিশ্র বলেন, মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর, জোর পূর্বক জমি দখল, বাড়ীঘরে অগ্নি সংযোগ, লুটপাট, শ্লীলতাহানি ও হিন্দুদের নির্যাতন করে দেশ থেকে হিন্দুজনগোষ্ঠীকে উৎখাত করে দেশকে হিন্দু শুন্য করার কুট কৌশন হিসেবে মনে করেছেন। তিনি আরো বলেন, জঘন্যতম কর্মকান্ডের সাথে প্রকাশ্যে জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়ার পরও তাদের সঠিক বিচারের আওতায় না আনায় হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
জাগো হিন্দু বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কমিটির আহ্বায়ক মিন্টু বালা বলেন, গত ১০ নভেম্বর টিটু রায়ের নামে ভুয়া ফেইসবুক একাউন্ট থেকে ‘মহানবীকে অবমাননার’ অভিযোগ তুলে ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩০টিরও বেশি বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় তিনি বিগত কয়েক বছরের হামলার বর্ণনা দিয়ে জানান, গত ১৪ নভেম্বর বাগেরহাটের চিতলমারীর আডুলিয়া গ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ঋষিকেশ ম-লের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামের চারটি পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়।
এর আগে গত বছরের অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাছিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তুলে ধরে মিন্টু বলেন, এসব ঘটনায় জামায়াত-শিবির সংঘবদ্ধভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে। নাছিরনগরে জামায়াত-শিবিরের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার দ্বন্দ্বকেও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর পোড়ানোর জন্য দায়ী করেন তিনি।
হিন্দুদের উপর হামলাসহ অতীতের সব হামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি এবং ষড়যন্ত্রমূলক হামলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বিনয় ভূষণ জয়ধর, নরেন্দ্রনাথ মজুমদার, গোবিন্দ প্রামাণিকসহ হিন্দু সম্প্রদায়েক শতাধিক লোক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন। সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি পল্টন মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।