পোপ ফ্রান্সিসের ঢাকা সফর ধর্মযাজক পদে অভিষিক্ত হবেন ১৬ জন
তরিকুল ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে আসছেন খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
পরদিন (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রমনার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটি উপাসনা অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করবেন পোপ ফ্রান্সিস এবং ওই অনুষ্ঠানে ষোলজন ডিকনকে ধর্মযাজক পদে অভিষিক্ত করবেন তিনি। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে তার সফরসূচি নিশ্চিত করা হল। বাংলাদেশে রোমান ক্যাথলিক চার্চের আর্চ বিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও পোপের সফর নিয়ে বলেন, পোপ ফ্রান্সিস প্রথমত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রপ্রধান রূপে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। দ্বিতীয়ত ক্যাথলিকম-লীর প্রধান ধর্মগুরু ও প্রধান পালক হিসেবে খ্রিস্টান সমাজের নিকট পালকীয় সফর করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, পোপের সফরের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে ভ্যাটিকানের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। কার্ডিনাল ডি রোজারিও জানান, ১৯৭০ ঢাকার বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার জন্য নেমেছিলেন পোপ ষষ্ট পল। সেটাই ছিল বাংলাদেশে কোনো পোপের প্রথম পদার্পণ। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন পোপ দ্বিতীয় জন পল। তিন দশক পর তৃতীয়বারের মত কোনো পোপ বাংলাদেশে আসছেন। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান।
পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ তিনি।
পোপের সফরসূচীর মধ্যে রয়েছে প্রথম দিন (৩০ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ ও বরণ, বিকেল চারটায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, চারটা ৪৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, পাঁচটা ৩০ মিনিটে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সন্ধ্যায় সেখানে রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুশীল সমাজ ও কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে পোপের ভাষণ। দ্বিতীয় দিন (১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাটিকান দূতাবাসে পোপের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এ ছাড়া বিকেলে রমনা সেন্ট মেরি’স ক্যাথিড্রাল পরিদর্শন, রমনার প্রবীণ যাজক ভবনে পোপ মহোদয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশপদের বিশেষ আলোচনা, আর্চবিশপ্স হাউজের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমা-লিক সমাবেশে পোপের ভাষণ। তৃতীয় দিন (২ ডিসেম্বর) সকালে মাদার তেরেসা ভবন পরিদর্শন, সেমিনারীয়ান ও নবিশদের সমাবেশে বক্তব্য প্রদান ও বিকেলে নটরডেম কলেজে যুব সমাবেশে ভাষণ প্রদান শেষে বিকেল পাঁচটায় রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন বিশ্বের ১২০ কোটি ক্যাথলিক খ্রিস্টানের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন