স্থায়ী ক্যাম্পাস করতে সরকার জমি দিলে ভাল হয়
অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়ম অমান্যকারী ৪৯টি বেশরকারি বিশ্ববিদ্যায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে জানুয়ারি মাস থেকে তাদের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয় তা শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি স্বক্ষমতা আছে। এটা তাদের নিজেস্ব ব্যাপার। সার্বিক বিবেচনায় এটা তারা করতেই পারে। তবে এর ফলে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হবে এর কোনো সন্দেহ নেই। কেননা বেশরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করছে। এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগেরই স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই। স্থায়ী ক্যাম্পাসগুলো আবার এমন যায়গায় করা হয়েছে সেখানে ভাল যোগাযোগের কোনো মাধ্যম নেই। কেউ কেউ আবার স্থায়ী ক্যম্পাস করেও শহরের মধ্যে ভাড়া ভবনে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এদেরকে কি বলব প্রকৃত অর্থে স্থায়ী ক্যাম্পাশ নাকি আইন রক্ষার ক্যাম্পাশ প্রশ্ন থেকেই যায়। বেশরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত এর আইনে কিছু অসম্পূর্ণতা আছে। যেমন ঢাকা শহরের তিন বিঘা অখ- জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস করার কথা বলা হয়েছে। ঢাকা শহরের জমির দাম ভাবনায় রাখলে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এধরনের আইন একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যা প্রয় অসম্ভাবই বলা যায়। এখানে কম টাকায় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পড়ালেখা করার সুযোগ করে দেওয়াটাই তো মূল উদেশ্য। পড়ালেখার জন্য পরিবেশ এবং পড়ার মান থাকা দরকার এটা সত্য। সেই সাথে একটা ক্যাম্পাস থাকবে সবই যোক্তিক দাবি। যারা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল তারা কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাস করে নিয়েছে। এর সংখ্যা ১০-২০টার বেশি হবে না। এতো টাকা খরচ করে স্থায়ী ক্যাম্পাস করলে সেই খরচের একটা প্রভাবতো শিক্ষর্থীদের উপরও পড়বে। বেশরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের দিক থেকে অলাভজনক বলছি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অলাভজনক না হলেও এই মুহূর্তে তাদের উপর এমন একটা চাপ দেওয়া ঠিক হবে না। বরং যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভাল, যাদের ট্রাক রেকর্ড ভাল বা যারা ভাল করার চেষ্টা করছে তাদেরকে আবাসিক এলাকার বাইরে কমদামে উপযুক্ত মূল্যে সরকারি জমি দিলে সঠিক বিচার করা হবে। কেননা বেশরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছুই ব্যক্তিগত হতে হবে এমনটাতো নয়। কেননা তারা তো একটা জতীয় দায়িত্ব পালন করছে। সে ক্ষেত্রে এর ফলাফল শিক্ষাক্ষেত্রে ভাল প্রভাব ফেলবে।
পরিচিতি : শিক্ষাবিদ ও সাবেক ইউজিসি ভিসি
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহাম্মাদ আব্দুল অদুদ