কম্বোডিয়ার আদালতে ২ সাংবাদিক অভিযুক্ত
ইমরুল শাহেদ : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার একটি আদালত শনিবার গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগে দুই জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে চালিত রেডিওকে তথ্য সরবরাহের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কম্বোডিয়ার লৌহমানব হিসেবে পরিচিত ও তিন দশকের শাসক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে দৃঢ়চেতা হয়ে উঠেছেন। তিনি ডানপন্থী এবং স্বাধীন গণমাধ্যমকে একেবারেই সহ্য করতে পারছেন না। যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, তারা কম্বোডিয়ার নির্বাচনে কোনো অর্থ প্রদান করবে না। একইসঙ্গে শক্ত অবস্থানের কথাও জানান দিয়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রের কথা বলে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে দেশটির প্রধান বিরোধী দল ‘কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টি (সিএনআরপি)’-কে বিলুপ্ত করে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই অবস্থান নিয়েছে। তবে দলটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অভিযুক্ত দুই সাংবাদিক উন চিন ও ইয়াং সথিয়ারিন ওয়াশিংটনভিত্তিক রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ)-এ কাজ করতেন। সেটি অনুষ্ঠান প্রচার করত খেমার ভাষায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে এই রেডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। নম পেন মিউনিসিপাল আদালতের মুখপাত্র লাই সোফানা বলেছেন, বিদেশিদের কাছে জাতীয় প্রতিরক্ষার ক্ষতি হতে পারে এমন তথ্য সরবরাহের অভিযোগ আনা হয়েছে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। লাই সোফানা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদেরকে তদন্ত বিচারকের কাছে পাঠানো হবে। কিন্তু আরএফএ জানিয়েছে, দুই সাংবাদিকের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার আগে এক ই-মেইল বার্তায় আরএএফের মুখপাত্র রোহিত মাহাজন বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সামনে হয়তো কোনো বড় ধরনের উদ্বেগ অপেক্ষা করছে।’ দুই সাংবাদিকের আইনজীবী বলেছে, অভিযোগ গুরুতর হলেও সাংবাদিক হিসেবে তারা তাদের দায়িত্বই পালন করেছেন। আইনজীবী কিও ভেন্নি বলেন, ‘এটা দেশের জন্য বিপজ্জনক নয়।’
হুন সেন মার্কিন দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিরোধী দলের বিলুপ্তি নিয়ে মতবিরোধে জড়িয়ে আছেন। বিরোধী দল সিএনআরপি নেতা কেম সোখাকে ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বিশ্বাসঘাতকতামূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার তার মুক্তি এবং বিরোধী দলকে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইতোমধ্যে কম্বোডিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছে। সূত্র : রয়টার্স