জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে মুগাবেবিরোধী সমাবেশ, পেছনে সেনা
ইমরুল শাহেদ : জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে শনিবার হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ভাবা যায়নি। মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে তার নিজের দলের নেতারা অংশ নিলেও এর পেছনে সেনাবাহিনী রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। গত বুধবার সেনা বাহিনী তার কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে গৃহবন্দী করেছে। জিম্বাবুয়ের যে স্থানটিতে এই সমাবেশ হয়েছে সেটা ছিল জনতার পদধ্বনিতে মুখরিত। এই স্থানটি অনেকটা প্রতীকী। কারণ ১৯৮০ সালে এখানেই জিম্বাবুয়ের দুই লাখ লোক সমবেত হয়েছিলেন নির্বাসন থেকে ফিরে আসা নেতা মুগাবেকে স্বাগত জানাতে। তখন মাত্র শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হয়েছে।
এক বছর আগেও যেসব নেতা ৩৭ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রবার্ট মুগাবের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারাই এখন ‘প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর’ আওয়াজ তুলছেন।
শুক্রবার জিম্বাবুয়ের ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে একে একটি ‘সংহতি সমাবেশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী আশা করছেন, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই এটি শান্তিপূর্ণ হবে এবং হয়েছেও তাই।
শনিবারের বিক্ষোভে জেনারেল কনসটান্টিনো সিওয়েঙ্গাকে স্বতঃস্ফূর্ত জনতা বলেছেন, ‘ সিওয়েঙ্গা মুগাবে জোর করে সরিয়ে দাও।’ তিনি ক্ষমতা নেওয়ার আগে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
এ সমাবেশটি ছাড়াও জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুলএওয়েওর সিটি হলেও একটি সমাবেশ হয়েছে। ফ্লোরেন্স মগুনি (৫৯) নামের একজন হারারাতে এসেছেন মুগাবের পতন দেখার জন্য। তিনি ১৫ বছর বয়সে স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সৈনিক ছিলেন।
ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৮০ সালে জিম্বাবুয়েকে স্বাধীন করেছিলেন মুগাবে। তখন থেকেই তিনি দেশটির ক্ষমতায় আছেন। এই সময়ে ‘আফ্রিকার রুটির ঝুঁড়ি’ হিসেবে খ্যাত দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়ে, সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে। এর জন্য স্বল্প সংখ্যক শ্বেতাঙ্গের হাতে থাকা দেশটির বৃহৎ জমি সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার ‘ভূমি-নীতি’কে দায়ী করা হয়। সূত্র : আল-জাজিরা