বনানীতে ৩ মিনিটের কিলিং চারদিন পার হলেও ধরা পড়েনি চার ‘শ্যুটার’
বিপ্লব বিশ্বাস : গুলি করে হত্যার চারদিন পার হলেও ধরা পড়েনি খুনিরা। পুলিশ বলেছে, খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো সময় তারা গ্রেফতার হতে পারে। গত মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে বনানীতে জনশক্তি রপ্তানিকারক (রিক্রুটিং) প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিক হোসাইনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। তবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে খুনিদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারে রাজধানীবাসীর সহায়তা চেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আলোচিত ওই হত্যাকা-ের ঘটনায় বনানী থানা পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) ও র্যাব ছায়া তদন্ত করছে।
ডিবি পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনার নেপথ্যে তারা চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ পায়নি। তবে সিদ্দিকের সঙ্গে কারো পারিবারিক বা ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। এদিকে, নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগমের দেওয়া তথ্যানুসারে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের আব্দুস সালাম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল সিদ্দিক হোসাইনের। তার কাছে সালাম ২০ লাখ টাকাও দাবি করেছিলেন। ওই ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছিল।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহজাহান সাজু বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা নিহতের পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয়, ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের বক্তব্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, তাদের প্রাথমিকভাবে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। খুনের ধরন দেখে মনে হয়েছে পরিকল্পিতভাবেই এ হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে এবং খুনিরা পেশাদার।
আহতদের কাছ থেকে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। নিহত ব্যবসায়ীর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে তদন্তকারীরা। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তাকর্মী বায়েজিদ বাজি ও অফিস স্টাফ আলী হোসেনকে বনানী থানা হেফাজতে রেখে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, হত্যাকা-ে সরাসরি চার জনের অংশ নেয়ার বিষয়টি সিসি ক্যামেরা ছাড়াও অন্যান্য মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া হত্যাকারীদের কে কে কিভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে সহায়তা করেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। হত্যাকা-ে জড়িত চার জনের পরিচয় জানার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে হত্যার পর অবলীলায় হেঁটে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে খুনিদের। হত্যাকারীরা যে পেশাদার, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর্থিক লেনদেনের সূত্রধরে ব্যবসায়ীক বিরোধের জেরে হত্যাকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু