সম্ভাবনার হাতছানি চামড়া শিল্পে
আরিফুর রহমান তুহিন : বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানি আয়ের উৎস চামড়া শিল্প। এই শিল্পকে ঘিরে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। যদিও বর্তমানে শিল্পটি ক্রান্তিকালীন সময় পার করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, কারখানার আধুনিকায়ন ও সরকারের সহযোগিতায় বিশ্বের অন্যতম চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।
চামড়া বাজার নিয়ে গবেষণায় প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার প্রায় ২২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে যা বৃদ্ধি পেয়ে ২৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে। আর এই শিল্পের বড় যোগানদাতা দেশ চীন। এছাড়া মিসর, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, পাকিস্তান ও ভারত এই পণ্যের বৃহৎ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত। তবে ২০৩০ সালে চীনে এই শিল্প ঐচ্ছিক শিল্প হতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, এই শিল্পটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানি আয়ের উৎস হলেও বিশ্ববাজারে তার দখল মাত্র ০.৪৬ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ, প্রযুক্তিনির্ভর কারখানার অভাব, অদক্ষ জনবল, নতুন পণ্য উদ্ভাবনের অভাব, পণ্যের গুণগত মান না থাকা এবং প্রধান কাঁচামাল ‘কাঁচা চামড়া’ পাচার হওয়া। এছাড়া ক্রেতা দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঘাটতির কারণেও এগোতে পারছে না বাংলাদেশ। সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে এই শিল্পটি বাংলাদেশের জন্য বড় রপ্তানি আয় এনে দিতে পারবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। এতে রপ্তানিতে সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা আরো বাড়বে। এছাড়া প্রধান যোগানদাতা দেশ চীন চামড়া শিল্প থেকে সরে আসায় অন্য দেশগুলো এই বাজার লুফে নিবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় নতুন বাজার দখল করা সম্ভব বলে মনে করে তারা। বর্তমানে এই শিল্পের জন্য রপ্তানি ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো দেশে বাংলাদেশের চামড়া সমাদৃত হয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ী টিপু সুলতান ভুঁইয়া জানান, দেশের চামড়া শিল্প ক্রান্তিকাল সময় পার করলেও সামনে উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের ব্যবসায়ীদের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য দেশে চামড়া নিয়ে এক্সপো হচ্ছে। এছাড়া আমরাও বিভিন্ন দেশের এক্সপোতে অংশগ্রহণ করে অভিজ্ঞতা ও বাজার ধরার চেষ্টা করছি। বর্তমানে এই খাতের প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো। প্রধানমন্ত্রী আরো ২টি চামড়া শিল্পনগরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এভাবে কারখানার আধুনিকায়নের ফলে সামনে রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, চামড়া শিল্পের জন্য অর্থনৈতিক জোনে আলাদা প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়। সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ