পৃথিবীর প্রথম মানব কখন কীভাবে সৃষ্টি হলো?
ওমর শাহ : মানব সৃষ্টি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ক্রমবিবর্তনবাদের দাবি হলো, বিদ্যমান মানবজাতি তাদের আদি সৃষ্টিকাল থেকে মানবরূপে সৃষ্টি হয়নি; বরং বহু স্তর ও পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান মানবাকৃতিতে উন্নীত হয়েছে। এ সম্পর্কে ইসলাম ধর্মের বক্তব্য একেবারেই ভিন্ন। ইমলামের দাবি, সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা মানুষকে নবী আদম আ.-এর আকৃতিতেই সৃষ্টি করেছেন। তারপর তারই অনুরূপ তার স্বজাতি হযরত হাওয়া আ. কে অস্তিত্বে এনেছেন এবং ধারাবাহিকভাবে মানবজাতির বংশবৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। আর আদম সন্তানকেই সকল সৃষ্টির ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আসমানি শরিয়তের আমানত তার ওপরই অর্পণ করেছেন। আর সকল সৃষ্টিকে মানুষের বশীভূত করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সর্বোত্তম গঠনে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তীন : আয়াত ৪)
পৃথিবী সৃষ্টির পরপরই আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম আ. কে সৃষ্টি করেছেন। মাত্র ৬ দিনে তিনি এ পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি নভোম-ল ও ভূম-লকে ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, এমনভাবে যে রাত দিনকে দ্রুত ধরে ফেলে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র নিজ আদেশের অনুগামী। জেনে রেখো, সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা তারই কাজ। বড় বরকতময় আল্লাহ, যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৫৪) এ পৃথিবী সৃষ্টির পরই আল্লাহ জিন ও হযরত আদম. আ. কে সৃষ্টি করেন। হযরত আদম. কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে। এ সম্পর্কে কুরআনে এসেছে, ‘আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক মৃত্তিকা (মাটি) থেকে এবং তার আগে সৃষ্টি করেছি জিনকে অত্যুষ্ণ অগ্নি থেকে। স্মরণ করো, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাগণকে বললেন, ‘আমি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক মৃত্তিকা থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছি; যখন আমি তাকে (তার দেহাবয়বকে) সুঠাম করব এবং তাতে আমার পক্ষ থেকে রুহ সঞ্চার করব তখন তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো। তখন ফেরেশতাগণ সকলেই একত্রে সিজদা করল, ইবলিস ব্যতীত, সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল।’ (সুরা হিজর : আয়াত ২৬-৩১
পবিত্র কুরআনের এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম আ. ও তাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। হযরত আদম আ. থেকেই মানবজাতির বংশ বৃদ্ধি হয়। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন