পত্রিকার রিপোর্টের বাইরেও গুম হত্যার ঘটনা ঘটছে নূর খান লিটন
গুম, হত্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দৃশ্যমান, বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্ত উদঘাটন ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে আমরা দেখছি না। কোনো তদন্তই দৃশ্যমান নেই। যে কোনো অপরাধ কমিয়ে আনতে বা বন্ধ করার জন্য যে কাজটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়, এই ধরনের অপরাধের বিচার করা। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি এবং ভয়ের যে সম্ভার, দুটি মিলেমিশে আজকে এই পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। প্রথম আলো গুম নিয়ে যে রিপোর্টটি করেছে তার সাথে আমি একমত। তবে সেখানে যে পরিসংখ্যানের কথা বলা হয়েছে, সেটি আরও বাড়তে পারে। কারণ, এখানে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সংখ্যাটি সমস্ত নিখোঁজের পরিসংখ্যান বলে না। এই সংখ্যাগুলো সেই লোকদের, যাদের আত্মীয় স্বজনেরা গুম হওয়ার পরে অভিযোগ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সন্তান বা আত্মীয় স্বজনকে উঠিয়ে নিয়েছে বা গুম করেছে। এবং সেই সংখ্যাটি আমরা দেখছি, যে সংখ্যাটি পত্রপত্রিকায় এসেছে। পত্রপত্রিকায় আসার বাইরেও এই ধরনের ঘটনার কথা আমরা জেনেছি বা দেখেছি। সাম্প্রতিককালে যশোরে একজন মা তার সন্তানকে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার মধ্যেই মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। এই প্রত্যাহারের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের ভেতরে একধরনের ধারণা জন্মেছে যে, তাকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। এখন একটি সন্দেহ সাধারণ মানুষ করে, তাদের ভেতরে বিষয়টি আলোচিত হয়। আসলে এই বিষয়টি থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে বা রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হলে বিচার বিভাগীয় বিশ্বাসযোগ্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। যে কমিশনের কাজ হবে এই ধরনের অপহরণের সাথে কারা জড়িত, কিভাবে জড়িত এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। বিচার অনুষ্ঠান আয়োজন করা। যদি বিচার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই ধরণের ঘটনা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। এবং একসময় পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করবে।
পরিচিতি : মানবাধিকার কর্মী
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ