সৌদির সঙ্গে গোপন যোগাযোগের কথা স্বীকার করলেন ইসরায়েলী মন্ত্রী
ইমরুল শাহেদ : ইসরায়েলের জ্বালানি মন্ত্রী যুবাল স্টেইনিটজ রোববার সৌদি আরবের সঙ্গে গোপন যোগাযোগের কথা স্বীকার করেছেন। কারণ ইরানকে নিয়ে দুই দেশের মধ্যেই একটা উদ্বেগ রয়েছে। দুই দেশের এই গোপন যোগযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে গুজব চলে আসছিল। একটি দেশ এর সত্যতা স্বীকার করায় সেই গুজবের কিছুটা হলেও অবসান হয়েছে বলে ধরা যায়। তবে ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই মন্তব্যে সৌদি আরব কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর একজন মুখপাত্রকে যখন এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে বলা হয়, তিনি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। সৌদি আরব এবং ইসরায়েল – দুটি দেশই ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য হুমকি মনে করে। তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ধরে নেওয়া যায়, পারস্পরিক স্বার্থেই সৌদি আরব ও ইসরায়েল একসঙ্গে কাজ করার দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তবে সৌদি আরব একটা বিষয়ে পরমতসহিঞ্চুতা বজায় রেখে চলছে। সেটা হলো ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় যেসব আরবভূমি ইসরায়েল দখল করে নিয়েছে, সেগুলো ফেরত দিতে হবে। সেখানেই হবে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন শান্তি দূত একাধিকবার এ বিষয়টি নিয়ে সৌদি সফর করেছেন। তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতায় ইসরায়েল-প্যালেস্টাইনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর চান। কিন্তু আর্মি রেডিওর এক সাক্ষাৎকারে স্টেইনিটজের কাছে যখন জানতে চাওয়া হলো, ইসরায়েল কেন সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের কথা গোপন করতে চাইছে, এ বিষয়ে তিনি বেশি কিছু আলাপ বা বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। উল্লেখ্য, স্টেইনিটজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা পরিষদেরও একজন সদস্য। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্কের বিষয় অংশত গোপন রেখেছি অনেক মুসলিম ও আরব দেশের কাছে। এ ব্যাপারে আমরা লজ্জিত নই।’
তিনি বলেন, ‘এর আরেকটি দিক হলো সম্পর্ক গোপন রাখার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। আমরা এটার মধ্যে কোনো সমস্যা দেখি না। আমরা অন্য পক্ষের ইচ্ছারও মর্যাদা দিয়ে থাকি। সেটা হতে পারে যে কোনো মুসলিম দেশ বা সৌদি আরব বা যে কোনো আরব দেশ। আমরা সেটাকে গোপন রাখি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল জুবায়েরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি সৌদি শান্তি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এই উদ্যোগ ২০০২ সালে প্রথম নিয়েছিল আরব লীগ। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই আরবের শান্তি পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংকটের অবসান করতে চেয়েছি। এটা করা গেলে সকলের সম্পর্কই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সব আরব দেশের সঙ্গেই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপিত হবে ইসরায়েলের। সেটা না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক হবে না।’
এই শান্তি পরিকল্পনার মূল বিষয়ই হলো, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েল যেসব আরব ভূখ- দখল করে নিয়েছে, সেখান থেকে তাদেরকে পুরোপুরি সরে যেতে হবে। এর মধ্যে পূর্ব জেরুজালেমও রয়েছে। সূত্র : রয়টার্স