যে কারণে ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্বসম্পদ নূহ-উল-আলম লেনিন
আমাদের এখানে একটি দল রয়েছে যারা অন্ধ, আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী। ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝলেও স্বীকৃতি দিতে চায় না। এটা জাতির অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি থাকবেন সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। ভারতে বিজেপি, কংগ্রেস, আরও অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে সবাই কিন্তু ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে কোনো বিতর্ক করে না। তারা সবাই তাকে স্বীকার করে নিয়েছে। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক করার কারণ, এদেশে এখনো পাকিস্তানের ভূত অনেকের ঘাড়ে চেপে আছে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেও স্বীকার করে না। সে কারণে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের অসাধারণ, অনন্য ভাষণটিকেও তারা মেনে নিতে পারেনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আমরা ৭ মার্চের ভাষণটি বাজাতে পারিনি। আমি তখন ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ছিলাম। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী জেল খেটেছে, প্রাণ দিয়েছে। সে সময় বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। আজ ইতিহাস প্রমাণ করল, কোনো ব্যক্তি বা দল স্বীকৃতি আর অস্বীকৃতিতে ইতিহাস নির্ভর করে না। ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতে চলে। আজ আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যে মর্যাদা বা স্বীকৃতি অর্জন করেছে, সেটা শুধু বাঙালি জাতির জন্যই নয়, সমগ্র মানব জাতির জন্য একটা গর্বের বিষয়।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আর এখন আমাদের একক সম্পদ নয়, পুরো মানব জাতির। আর যারা বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করছে, তার ভাষণের বিরোধিতা করছে, তাদের মুখে কালি মেখে দেওয়া হয়েছে। যদিও এটা আমি জানি, এতকিছুর পরেও এটা নিয়ে তেমন ইতিবাচক মতামত দিবে না। ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতির বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের মন্তব্য দায়সারামূলক। জাতির জনকের ভাষণ ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। যে ভাষণের কথা শুনে স্বয়ং জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার পরে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের জন্য ছিল দিক-নির্দেশনা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পরে আমাদের মতো এই উৎসবে বিএনপিও সামিল হতো, অথবা নিজেরা একটা উৎসব পালন করত তাহলে বুঝতাম তারা মূলধারায় ফিরেছে। তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার প্রাপ্ত আসন দিয়েছে। যেখানে সারা বিশ্বের মানুষ আজ এটাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু এটা তারা দিবে না। শুধু মুখ রক্ষার্থে, ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু মনেপ্রাণে তারা সব সময় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে, তার আদর্শের বিরুদ্ধে। বঙ্গবন্ধুর নাম মনেপ্রাণে তারাই উচ্চারণ করতে দেয়নি এদেশের জনগণকে। ইতিহাস তাদের বিচার করেছে। ভবিষ্যতেও আদর্শবিচ্যুত, সুবিধাবাদী এসব দল ইতিহাসের খড়কুটো হয়ে এক সময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
পরিচিতি : সাবেক সভাপতিম-লীর সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ: গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : আশিক রহমান