রাজধানীতে মাদ্রাসার ভেতরে ছাত্রের গলাকাটা লাশ
সুজন কৈরী : রাজধানীর গুলিস্তানের মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসার ভেতর থেকে মো. জিদান (১১) নামের এক ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার ভোর ৪টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে জিদান ওই মাদ্রাসায়ই থাকতেন। হত্যাকা-ে জিদানের সহপাঠী আবু বক্কর জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ ওই শিক্ষার্থী পলাতক। পুলিশ হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছে। পুলিশ বলছে, মুখ বেঁধে হত্যার পর জিদানের লাশ কোলে করে ম্যানহোলে ফেলে মাদ্রাসার গেটের পাশের বেড়া ছিঁড়ে পালিয়ে যায় আবু বকর।
মাদ্রাসার হাফেজি বিভাগের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মইনুদ্দিন জানান, ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি তার কক্ষের পাশের টয়লেটে যাচ্ছিলেন। টয়লেট সংলগ্ন হাউসের পাশে জিদানকে পড়ে থাকতে দেখে সবাইকে তিনি ডেকে তোলেন। এরপর কাছে গিয়ে জিদানকে শ্বাসনালী কাটা অবস্থায় পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুলিস্তানের আহাদ পুলিশ বক্স সংলগ্ন মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসায় তিন বছর ধরে পড়ছিলেন জিদান। কোরআন শরীফের ১৬ পারা মুখস্ত করেছিলেন। জিদানের বাবার দুই বিয়ে ছিল। প্রথম ঘরে ৩ ভাই ও এক বোন এবং দ্বিতীয় ঘরে দুই ভাই। জিদান দ্বিতীয় ঘরের ছোট ছেলে। তার মা বড় ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ওয়ারী থানার বিসিসি রোডে থাকেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি শান্তিনগর বাজারে মুরগির ব্যবসা করেন। মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আবু বক্কর এক বছর আগে হাফেজ হয়েছেন। শিক্ষকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ পারা কোরআন পড়ে শোনানোর পর মাদ্রাসা ছাড়ার কথা ছিল তার। তিনি মাদ্রাসার সবচেয়ে সিনিয়র শিক্ষার্থী হওয়ায় অন্যদের নেতা ছিল। গত কোরবানি ঈদের ছুটি শেষে মাদ্রাসায় ফেরার পর আবু বক্করের সঙ্গে প্রায় সময়ই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাকবিত-া হতো জিদানের। পরে এই ঝগড়া হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষকরা মীমাংসা করেছিলেন। পল্টন থানার ওসি মো. মাহমুদুল হক বলেন, নিহতের বাবা ওই মাদ্রাসার ছাত্র আবু বক্করকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। আবু বক্করের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তাকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে। সম্পাদনা : ইসমাঈল হুসাইন ইমু