সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী সংবিধানের দোহাই দিয়ে এরশাদও চেয়েছিলেন ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : সংবিধানের দোহাই দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চেয়েছিলেন আরও ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে। কিন্তু পারেননি। এভাবে আসলে ক্ষমতায় থাকা যায় না। জনগণ কি চায়, তাদের ভাষা কি তা বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। আমাদের কথা খুব স্পষ্ট, নির্বাচনের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। পার্লামেন্ট বহাল রেখে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। পার্লামেন্ট ভেঙে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবেÑ আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। তাদের প্রতি দেশের জনগণেরও কোনো আস্থা নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে কোনো প্রার্থীই ছিল না। যা-ও একটা গৃহপালিত বিরোধী দল রয়েছে, তারাও তো প্রার্থী দিতে পারেনি। মানে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনে অনুপস্থিত ছিল।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। পাঁতানো নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় যেতে চায়। সে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ আর পূরণ হতে দেবে না। আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারই হতে হবে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পদ্ধতি।
এক প্রশ্নের জবাবে নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, এই সরকারের অধীনে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, তার প্রমাণ হলো গত উপজেলা নির্বাচন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছিল, এতে আমাদের ৮০ শতাংশ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে গিয়ে সব তারা নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যৌক্তিক কারণেই আমরা অংশগ্রহণ করিনি। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের লোকদের পাস করতে দেয়নি দু-একটা ছাড়া। ইউনিয়ন পরিষদে তো কোনো রাখডাক করেনি, একচেটিয়া নিয়ে গেছে। অতএব এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের দাবি এ কারণেই।
সুপ্রিমকোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী আরও বলেন, বিএনপিবিহীন নির্বাচন এদেশে আর কখনো হবে না। বিএনপি নির্বাচনের দল, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। দেশÑ জনগণ ও প্রজাতন্ত্রের। আমারা নির্বাচন করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। জনগণের পক্ষে তাদের নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা মানতে হবে। এটা জনদাবি। নির্বাচন ছাড়া তো সরকার পরিবর্তন হবে না। নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে একটা সমঝোতা হবে বলে আমি মনে করি এবং সরকারকে জনদাবি মানতে হবে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে তারা লুটপাট চালাচ্ছে। প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হচ্ছে। তারা তো আর চাইবেই একই কায়দায় আবারও ক্ষমতায় যেতে। কিন্তু সেটি আর পারবে না।
তিনি আরও বলেন, পার্লামেন্ট রেখে নির্বাচন কীভাবে সম্ভব? পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। সংসদ্য সদস্য পদে থেকে নির্বাচন করলে এমপিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন। আর আমাদের প্রার্থীদের পক্ষে এটা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার। এরশাদ সাহেব তো বলেছেন, সংবিধানে এটা নেই সেটা নেই কিন্তু মানতে হয়েছে।
জনগণ পরিবর্তন চায়। সরকারে থাকলে অনেক কথা-ই বলা যায়। আওয়ামী লীগের এখন জনসমর্থন নেই, বলা যায় জনগণের সমর্থন শূন্য একটি রাজনীতিক দল। তারা এখন মাঠে নামুক, তখন দেখা যাবে কার প্রতি জনগণের আস্থা বা সমর্থন রয়েছে।
সম্পাদনা : আশিক রহমান