বিচারকদের চাকরিবিধির খসড়া চূড়ান্ত করে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হয়েছে: আইনমন্ত্রী
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির খসড়া চূড়ান্ত করে সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে ফেরত গেলেই ওই খসড়া অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ‘রিফ্রেশার কোর্সের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের জুডিশিয়াল কর্মকর্তাদের রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণার্থী বিচারক ছাড়াও আইন মন্ত্রণালয় ও ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
খসড়া প্রকাশের বিষয়টি কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি এরকম যে আমরা আলোচনার মাধ্যমে যে ড্রাফটে সম্মত হয়েছি, সেটার ফাইনাল ড্রাফট করা হয়েছে। সেটা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে মুহূর্তে ফিরে আসবে, আমি আইন মন্ত্রণালয় থেকে সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেব।
যে গেজেট সরকার প্রকাশ করতে যাচ্ছে, সেখানে সেই ‘দ্বৈতশাসনের’ অবসান ঘটবে কি না- এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, যখন এটা বেরুবে নিশ্চয়ই দেখবেন দ্বৈতশাসন আছে কিনা। দেখেন, উনার এসব কথার প্রত্যেকটার জবাব আমি দিতে পারব না। তার কারণ হচ্ছে, আমি দিব না। আরেকটা কথা হচ্ছে, আপনারা দেখেছেন, কত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়েছে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চলে যাওয়ার পরে। আমার মনে হয় বাকিটুকু আপনারা বুঝে নিতে পারবেন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউ শুনানির ক্ষেত্রে কোনো সংকট হবে কি না এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, রিভিউ শুনানিতে সাত বিচারপতি থাকতে হবে সুপ্রিম কোর্ট রুলসে এমন কোনো কথা নেই আমার জানা মতে। এমন অনেক রিভিউ আছে যেখানে অনেকেই অবসরে গেছেন, কিন্তু রিভিউ শুনানি হয়েছে। তবে আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে।
উল্লেখ্য, বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের দীর্ঘ টানাপড়েনের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক একবার বিধিমালার খসড়া সুপ্রিম কোর্টে জমা দিলেও সম্প্রতি পদত্যাগ করা প্রধান বিচারপতি সিনহা গত ৩০ জুলাই তা গ্রহণ না করে কয়েকটি শব্দ ও বিধি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মতপার্থক্য নিরসনে আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইন মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় ডেকেছিলেন তিনি। কিন্তু আইনমন্ত্রী সে সময় সুপ্রিম কোর্টে না যাওয়ায় গত ২০ আগস্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি সিনহা। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন