জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি ঢাবির ৭ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সুজন কৈরী : পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হওয়া ৭ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- তানভীর আহমেদ মল্লিক, মো. বায়োজিদ, নাহিদ ইফতেখার, ফারদিন আহমেদ সাব্বির, প্রসেনজিত দাস, রিফাত হোসাইন, আজিজুল হাকিম। এরা সকলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গতকাল ভোরে উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সিআইডির একটি দল তাদের গ্রেফতার করে। এই শিক্ষার্থীরা ২০১৬ সালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। এর আগে গত ১৪ নভেম্বর রংপুর থেকে জালিয়াতি করে ঢাবিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাভিদ আনজুম তনয়কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই চক্রের সদস্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এনামুল হক আকাশকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তনয়ের কাজ ছিল এই প্রক্রিয়ায় ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী যোগাড় করা। এই দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নাম জানায় তারা। এরপর ওই সাত শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।
মোল্যা নজরুল বলেন, তারা ডিভাইসের সহায়তায় পরীক্ষার্থীদের উত্তর দিতো। এর আগে আমরা এমন ডিভাইস উদ্ধার করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে এই চক্রটি তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকা নিতো বলে আমরা তথ্য প্রমাণ পেয়েছি।
সিআইডি’র কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতিতে সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাতজন জালিয়াতিতে সরাসরি যুক্ত। সিআইডি’র কর্মকর্তারা আরও জানান, গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অমর একুশে হল ও ড. শহীদুল্লাহ হলে অভিযান চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহীউদ্দিন রানা ও আবদুল্লাহ আল মামুনকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সেখানে চক্রের অন্যতম হোতা তনয়ের নাম উঠে আসে। এরপর গত ১ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে একই চক্রের সদস্য ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিকে আটক করা হয়। এরপর ৩ নভেম্বর আটক করা হয় চক্রের অপর সদস্য আনিনকে। সম্পাদনা : ইসমাঈল হুসাইন ইমু