বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে একক কর্তৃপক্ষ চায় ওয়াসা
আহমেদ রাজু : ঢাকা সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঢাকা ওয়াসার সমন্বয়হীনতায় পানি জমে ঢাকার রাস্তায়। তাই পানি নিষ্কাশনে একক কর্তৃপক্ষের দাবি করেছে ঢাকা ওয়াসা। তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। এটি করা হলে নগরীর রাস্তা কখনো পানিতে ডুববে না।
গতকাল ওয়াসা ভবনের কনফারেন্স রুমে ‘সার্বিক অগ্রগতি ও আগামীর কর্ম-পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান এ দাবি জানান।
ঢাকা ওয়াসার ৮ বছরের সাফল্য তুলে ধরে তাকসিম এ খান বলেন, পানি নিষ্কাশনে গঠিত প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ড্রেনেজ ডাইরেকটোরেট কিংবা ড্রেনেজ অথরিটি। তিনটি প্রতিষ্ঠানকে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব না দিয়ে একক কর্তৃপক্ষের অধীনে আনলে ঢাকার রাস্তায় কখনো পানি জমবে না। তাকসিম এ খান বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি শহরে ১২ শতাংশ জলাধার থাকা জরুরি। কিন্তু ঢাকায় আছে মাত্র ২ শতাংশ। নগরীর খাল, ডোবা ও জলাশয় দখল হয়ে গেছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ এখন বন্ধ।
ওয়াসার সাফল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১০ সালে ওয়াসার সিস্টেম লস ছিল ৪০ শতাংশ, এখন তা ২২ শতাংশ। ২০০৭-০৮ সালে রাজস্ব আদায় ছিলো ৩০০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ সালে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচীর সঙ্গে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে ওয়াসাও চালু করেছে শতভাগ ডিজিটাল বিলিং সিস্টেম, ই-মেইল কিংবা এসএমএস -এর মাধ্যমে বিল প্রদানের ব্যবস্থা চালু। গ্রাহক এখন ঘরে বসেই জানতে পারেন বিলের হালনাগাদ তথ্য। মোবাইল ফোন ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও বিল দিতে পারেন গ্রাহক। তাকসিম এ খান বলেন, ১৬১৬২ নম্বরে ফোন করে গ্রাহক অভিযোগ জানাতে পারেন। শতভাগ ই-জিপির মাধ্যমে ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াও করা হয়েছে ডিজিটাইজড।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ওয়াসার পরিচালন ব্যয় ছিল দশমিক ৯ শতাংশ। এখন তা দশমিক ৬৬। দশমিক ৬৫ শতাংশ পরিচালন ব্যয়কে বিশ্বে আদর্শ ধরা হয়। সেদিক থেকেও বাংলাদেশ সঠিক অবস্থানেই আছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ডিএমএ পদ্ধতি চালু করে ঢাকা ওয়াসা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে। এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতাসংস্থারা ঢাকা ওয়াসাকে রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করছে। ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেপালসহ সার্কভুক্ত দেশে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন বিনিয়োগ রয়েছে ১.৯ বিলিয়ন ডলার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান ও জনতথ্য কর্মকর্তা মোস্তফা তারেক। সম্পাদনা : তরিকুল ইসলাম সুমন