রোহিঙ্গারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাংলাদেশেই নিরাপদে থাকতে চায়
মিনা ফারহা
বিদেশীরা করলেও ‘গণহত্যা’ শব্দটি কিছুতেই ব্যবহার করল না হাইকমান্ড। সংসদেও সুচিকে অসহায় প্রমাণের চেষ্টায় ডেসপারেট। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে সুচির সংবেদনশীলতার সাফাই। ‘পাশে’ থাকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো। ‘যাচাই-বাছাই’ শব্দ দুটি বাদ দিয়ে সুচির ভুয়া আশ্বাসের প্রশংসা। ‘এগুলোর সময় এখনো আসেনি’Ñ পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্যে ‘এগুলো’ বলতে কী বুঝিয়েছে? রোহিঙ্গাদের ঢল নামার আশঙ্কা থেকেই কি সুপারিশগুলোকে নাকচের ইঙ্গিত ‘এগুলো’? ২০১৬ সালেও প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার প্রবেশ। মানবতা দেখাতে গিয়ে যে শূলে চড়ালেন হাইকমান্ড, দ্রুত এর ব্যাখ্যা প্রয়োজন। মলমথেরাপিস্টদের কেউই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে প্রমাণ করল, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ী করতেই মাছের মায়ের কান্নাকাটি। ১৮ অক্টোবর ইইউ দূতের দুটি বক্তব্যে মিলিয়ন ডলারের উত্তর। মানবজমিন ১৯ অক্টোবরÑ ‘… রোহিঙ্গা সঙ্কটে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে সময় লাগবে। তার মতে, এ সঙ্কট নিরসনে রাশিয়া, চীন ও ভারতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মিয়ানমারে চীনের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যিক স্বার্থের বিষয়টি সঙ্কট সমাধানে যেকোনো উদ্যোগের জন্য বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।’
নয়া দিগন্ত ১৮ অক্টোবরÑ মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সীমাবদ্ধতা আছে। Ñইইউ রাষ্ট্রদূত। ‘এই ভূমিকা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের কাছে দৃশ্যমান হয়েছে। এ জন্য আমরা রাখাইন সঙ্কট নিরসনে নিরাপত্তা পরিষদে অনেক প্রস্তাবই পাস করতে পারিনি। এর সাথে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে মিয়ানমার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এসব কারণে মিয়ানমারে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ও জাতিগত নির্মূল অভিযান চলার পরেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দ্বিধাগ্রস্ত।’ অতএব হিন্দু, বিহারি, রোহিঙ্গা… ক্রাইসিসের রঙ এক। প্রতিটি ঘটনাই আওয়ামী আমলে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আওয়ামী বন্ধুদের অবস্থান, ’৭১-এর পাকিস্তানের মতোই নৃশংস্য। ’৭৩-এর চুক্তি অনুযায়ী ফেরত নেয়ার আগেই প্রায় এক লাখ যুদ্ধবন্দীকে ফেরত। পররাষ্ট্রনীতি আওয়ামী লীগকে দিয়ে হবে না। হিন্দু এবং বিহারিদের পর রোহিঙ্গারাও প্রমাণ করল, আওয়ামী লীগ রাজনীতি বোঝে না।
সারমর্ম : বিহারিরা এখনো ফেরত যেতে চায়। হিন্দুদের আত্মা ভারতে, দেহ বাংলাদেশে। সুচির কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে কিছুতেই ধরা দেবে না রোহিঙ্গারা। বরং পরিবার-পরিজন নিয়ে বাংলাদেশেই নিরাপদে থাকতে চায়। আর সেটাই সফল করতে যেন পরাশক্তিদের সাথে হাত মিলিয়েছে আওয়ামী লীগ।
লেখক : কলামিস্ট
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন