বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার দুটো দেশই চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ
অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন
চীন এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিন স্তরের প্রস্তাব পেশ করেছে। কিন্তু এখানে তারা যুদ্ধের কথা বলেছে, যুদ্ধটাতো করছে মিয়ানমার নিজেই। প্রস্তাবগুলো যদি দেখি তাহলে চীনের আগের অবস্থান থেকে সরে এসে এই কথা বলাকে ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখি। আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফার ভিত্তিতেই এগিয়ে আসা উচিত। চীন যেহেতু তাদের ইতিবাচক অভিমত ব্যক্ত করেছে, সেটা ভাল একটা দিক। এখানে আরেকটি বিষয়, চীন বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার দুটো দেশকেই প্রধান্য দিয়ে থাকে। কারণ, দুটো দেশই চীনের কাছে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বৃহৎ রাষ্ট্র হিসেবে চীনের একটি দায়বদ্ধতাও রয়েছে। দফা হিসেবে চীনের প্রস্তাব যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত। মিয়ানমারকে সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে । রাখাইনে এখনও যে সকল রোহিঙ্গা রয়েছে তারা যেন আর নতুন করে বাস্তুচ্যুত না হয়, তাদের যেন ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসতে না হয়, সে পরিস্থিতি মিয়ানমারকে তৈরি করতে হবে। আসেম সম্মেলনে দুটো বিষয় উল্লেখ করা হয়নি, মূলত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন বিষয়টা সরাসরি উল্লেখ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং সেটা সক্রিয়ভাবে অর্থাৎ কোনো ধরণের শর্তসাপেক্ষে নয় একবারে শর্তহীনভাবে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া এবং নাগরিত্ব দেওয়ার বিষয়টা এই সম্মেলনে অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করা দরকার ছিল। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে এগিয়ে আসুক সেটা ঠিক আছে, কিন্তু উন্নয়নে কোনো লাভ হবে না যদি তাদের মিয়ামারের নাগরিকত্ব না দেওয়া হয়। তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া এবং নাগরিকত্ব দেওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়ন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া। এখানে যে সকল প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এখানে আরও কিছু বিষয় সংযোজন করা প্রয়োজন ছিল এবং সুনির্দিষ্টভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি যুক্ত করা জরুরি।
পরিচিতি : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢা.বি.
মতামত গ্রহণ : সাগর গনি
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ